১৫ মার্চ, ২০২২

ছাত্রলীগের নিয়োগ বাণিজ্য

 



দেশের কোটি কোটি বেকার ছাত্রলীগের তাদের ব্যবসার টার্গেট। এদেশে চাকরী পাওয়া মোটেই সহজ ব্যাপার নয়। চাকুরী পাওয়ার জন্য তাই সবাই ক্ষমতাসীনদের কাছে দ্বারস্ত হয়। সকল সরকারি চাকুরীর জন্যই এদেশে ক্ষমতাসীনদের ঘুষ দিতে হয়।

এই কাজে আওয়ামী এমপি, মন্ত্রী ও নেতারা বেশি জড়িত থাকলেও পিছিয়ে ছিল না ছাত্রলীগ। এই ক্ষেত্রেও পুরো নিয়োগ বাণিজ্যের চিত্র থেকে গেছে আড়ালে। যেসব ঘটনায় টাকা নেয়া হয়েছে কিন্তু চাকুরী দেয়া হয়নি এমন কিছু ঘটনা ও টাকা ভাগাভাগি নিয়ে সমস্যা হয়েছে এমন কিছু ঘটনা মিডিয়ায় এসেছে।

যারা টাকার বিনিময়ে চাকুরী পেয়েছেন তারা নিজেদের ধন্য মনে করেছেন তাই তারা এই বিষয়ে চুপ থেকেছেন। গত ছয় বছরসহ পুরো আওয়ামী আমলে পিয়ন, ক্লিনারের চাকুরী থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক পর্যন্ত সকল চাকুরীতে মোটা অংকের ঘুষ প্রদান করা নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। অল্প বেতনের চাকুরীর জন্যও অনেক মোটা অংকের ঘুষ বাধ্যতামূলক হয়ে গেছে ।

ঘুষ দিয়ে চাকুরী নেয়ার ফলে বাংলাদেশের সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতির বেশ প্রসার হয়েছে। প্রত্যেকেই তাদের ঘুষ দেয়া টাকা উদ্ধার করতে সচেষ্ট হয়েছেন দুর্নীতির মাধ্যমে।

২০১৮ সালের ২৮ নভেম্বর কালের কন্ঠে প্রকাশিত একটি খবরের শিরোনাম, ‘ছাত্রলীগ নেতার আপত্তিতে স্থগিত পবিপ্রবিতে নিয়োগ’। ছাত্রলীগ দাবী করেছে তাদের দেয়া তালিকা থেকেই নিয়োগ দিতে হবে।

২১ জানুয়ারী ১৪ সালে বাকৃবি ছাত্রলীগের নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে জনকন্ঠে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের বেপরোয়া হয়ে ওঠার নেপথ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে টেন্ডারবাজি ও শতাধিক পদে কর্মচারী নিয়োগ বাণিজ্য। ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারসহ পূর্ব শত্রুতার জের ও নিয়োগ বাণিজ্যে প্রশাসন এবং ছাত্রলীগের ভাগ বাটোয়ারা নিয়েই মূলত শনিবারের সংঘর্ষে নিহত হয় আট বছরের শিশু রাব্বি। চলতি সপ্তাহে এ নিয়োগ চূড়ান্ত হওয়ার কথা ছিল।

এই নিয়োগকে সামনে রেখে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব লাভে স্বপ্নে বিভোর ও ক্ষমতালোভী মিডলেভেলের একটি পক্ষ আজাদ-ইমন নেতৃত্বের বিভেদকে প্রকাশ্যরূপ দিতে পুরো ঘটনাকে উস্কে দেয়। আর এরকম পরিস্থিতিকে ক্যাম্পাসে নিজেদের শক্তির জানান দিতে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়ার এক পর্যায়ে গুলিবিনিময়ে লিপ্ত হয় ছাত্রলীগের দু’গ্রুপ। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মাঠে গরু চড়াতে এসে দুগ্রুপের সশস্র মহড়ার বলি হয়ে লাশ হয় স্থানীয় বয়রা গ্রামের অটো রিকশা চালক দুলালের শিশুপুত্র রাব্বি। অসহায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের কাছে আত্মসমর্পণ করলেও এসব নিয়ে এখন ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী।

তৎকালীন বাকৃবি ভিসি বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ড. রফিকুল হক জনকণ্ঠকে জানান, এটি ছাত্রলীগের নৈতিক অবক্ষয় ছাড়া আর কিছুই নয়। ছাত্রনেতাদের লেজুড়বৃত্তির কারণেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, অফিসার ও কর্মকর্তাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের জিম্মি কর্তৃপক্ষ অনেক সময় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে না।

১১ জুলাই ২০১৮ তারিখে বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত ‘ছাত্রলীগ নেতাকে চাকরি দিতে ইবির নিয়োগ বোর্ড স্থগিত’! শীর্ষক প্রতিবেদনে জানা যায়, ইবি’র ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ড চতুর্থবারের মত স্থগিত হয়েছে। সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতাকে চাকরির সুযোগ করে দিতেই প্রশাসন এবার শিক্ষক নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ড স্থগিত করেছে বলেঅভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ছাত্রলীগ নেতা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আনিচুর রহমান আনিচ। বর্তমানে তিনি কুষ্টিয়া সদর থানা ছাত্রলীগের আহবায়ক।

১৭ সালের ২৭ এপ্রিল প্রথম আলোর প্রতিবেদনে জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বিশেষ কর্মকর্তার’ পদ তৈরি করে এবং নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই ছাত্রলীগের ১২ জন নেতাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।’ এবং এদের বিশেষ যোগ্যতা ‘এরা ছাত্রলীগ করে’। এর আগেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন শত শত নিয়োগ হয়েছে শুধু ‘ছাত্রলীগ করে’ এই যোগ্যতায়।

এর আগে ২০১২ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ছাত্রলীগের ৩১ জন নেতা-কর্মী নিয়োগ পেয়েছেন। এর মধ্যে ২২ জন নিয়োগ পেয়েছেন সাবেক উপাচার্য মেসবাহউদ্দিন আহমেদের সময়ে ২০১২ সালে।

জানতে চাইলে উপাচার্য মীজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের চাকরি দিতে আমি বাধ্য। নিয়োগপ্রাপ্ত ওই ১২ জন কঠোর পরিশ্রমী নেতা-কর্মী ছিলেন। এর মধ্যে দুজন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার বাসিন্দা। এটাই তাঁদের সবচেয়ে বড় পরিচয়।’ তাহলে সাধারণ প্রার্থীদের কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ ছাত্র বা চাকরিপ্রার্থী বলতে কিছু নেই। এখানে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাই চাকরি পাবেন। এটাই তাঁদের বিশেষ যোগ্যতা।’

নিয়োগ বাণিজ্যের কিছু খন্ডচিত্র 
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি ‘যুবলীগের’, সেকশন অফিসাররা ছাত্রলীগের
উপাচার্য (ভিসি) নিজে ছিলেন আওয়ামী যুবলীগের নীতিনির্ধারণী পর্ষদ সভাপতিমন্ডলীর সদস্য। তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকশন অফিসার পদে ১০ জন ও স্টোর অফিসার হিসেবে একজনকে নিয়োগ দিয়েছেন, যাঁদের নয়জনই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। বাকি দুজন চাকরি হয়েছে প্রশাসনের ‘পছন্দের’ কোটায়। এ ঘটনা ঘটেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর, এই ১১ জনের নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয় ‘একতরফা’ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের দিন ৪ জানুয়ারি।
১০ জানুয়ারি ২০১৪/ প্রথম আলো 

নিয়োগের দাবিতে রেজিস্ট্রারের কক্ষে ছাত্রলীগের তালা
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) নেতা-কর্মীদের নিয়োগের দাবিতে রেজিস্ট্রারের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। আজ শনিবার বেলা একটা থেকে দেড়টা পর্যন্ত তারা ওই কক্ষে তালা ঝুলিয়ে রাখে। পরে উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনার পর তালা খুলে দেওয়া হয়। ক্যাম্পাস ও ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, ৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ডেটা প্রসেসর পদে বিজ্ঞাপিত চারটি পদের বিপরীতে ১০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। সেকশন অফিসার পদে একটি পদের বিপরীতে তিনজনের নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়। টেকনিশিয়ান পদে দুটি পদের বিপরীতে দুজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এ ছাড়া আরও কয়েকটি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এসব নিয়োগে নেতাদের কোনো সুপারিশ রাখা হয়নি বলে অভিযোগ এনেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বেলা একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আশরাফুল আলমের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন।
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪/ প্রথম আলো

ছাত্রলীগ নেতাকে শিক্ষক বানাতে যোগ্যতা শিথিল!
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় ২০১২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে গ্রেডিং পদ্ধতিতে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের এসএসসি বা সমমান ও এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষার উভয়টিতে ন্যূনতম জিপিএ-৩.০ পয়েন্ট এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে পৃথকভাবে ৩.৫ থাকতে হবে। কিন্তু এমন একজন শিক্ষার্থী উক্ত পদে আবেদন করেছেন, যিনি এইচএসসিতে পেয়েছেন ২.৯। তিনি হলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি রন্টু দাশ। বিভাগের প্ল্যানিং কমিটি এর প্রতিবাদ করলেও বিভাগের প্রভাবশালী এক শিক্ষকের চাপে আবেদনপত্রটি গৃহীত হয়। আর এরই মধ্যে শিথিল করা হয় শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতাও। এদিকে, কাল পয়লা এপ্রিল ইতিহাস বিভাগের নির্বাচনী বোর্ডের তৃতীয় দফা সভায় রন্টু দাশের নিয়োগ চূড়ান্ত করার সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
৩১ মার্চ ২০১৪/ প্রথম আলো 

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ভন্ডুল করল ছাত্রলীগ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ভন্ডুল করে দিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। দলীয় এক নেতাকে ইন্টারভিউতে সুযোগ না দেওয়ায় তাঁরা ওই পরীক্ষা বন্ধ করে দেন। ওই কারণে বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষক পদে নিয়োগ বন্ধ হয়ে যায়। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাঙে১০টায় উপাচার্যের দপ্তরের সামনে এ ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, শর্ত পূরণ না হওয়ায় ফয়সাল আরেফিন নামের ওই আবেদনকারীকে ইন্টারভিউ কার্ড দেওয়া হয়নি।
১৫ অক্টোবর ২০১৪/ প্রথম আলো 

ছাত্রলীগের সেই ১০ জনকে এবার গ্রেড–১–এ নিয়োগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকশন অফিসার পদে (গ্রেড-২) নিয়োগ পাওয়া ছাত্রলীগের সাবেক ১০ নেতা-কর্মীকে এক বছরের মাথায় গ্রেড-১-এ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে সেকশন অফিসারের ছয়টি শূন্য পদের উল্লেখ থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ওই পদে ও সমমানের পদে ১০ জনের নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, গত চার বছরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকশন অফিসার পদে (গ্রেড-১ ও গ্রেড-২) নিয়োগপ্রাপ্তদের সবাই ছাত্রলীগের সাবেক নেতা-কর্মী। পত্রিকায় নামমাত্র নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এবং অনিয়ম করে তাঁদের নিয়োগ করা হয়েছে। তবে উপাচার্য মীজানুর রহমান বলেছেন, সাক্ষাৎকারে যাঁরা ভালো করেছেন, যাচাই করে তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
২০ এপ্রিল ২০১৫/ প্রথম আলো

কলেজে তালা দিল ‘যুবলীগ–ছাত্রলীগ’
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বদরখালী কলেজের ১৪টি কক্ষে গতকাল শনিবার যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আলতাফ হোসেন নামের একজন শিক্ষককে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেওয়ার দাবিতে তালা ঝোলানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও শিক্ষার্থীরা বলেন, সকাল নয়টায় কলেজের সামনে জড়োহন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। সকাল সাঙেনয়টায় বদরখালী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হামিদ উল্লাহ ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে তাঁরা কলেজে ঢুকে ২০-২৫ জন শিক্ষার্থীকে বের করে দিয়ে ১৪টি কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে তাঁরা বদরখালী বাজারে এসে বিক্ষোভ করেন।
২৫ মে ২০১৪/ প্রথম আলো 

ছাত্রলীগের অবরোধের মুখে শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডের সভা স্থগিত
ক্যাম্পাস বন্ধ থাকা অবস্থায় সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ রাখার দাবিতে উপাচার্যের কার্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যকে আজ বৃহস্পতিবার তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে ছাত্রলীগ। পরে নিয়োগ বোর্ডের সভা স্থগিতের ঘোষণা দিয়ে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত হন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য।
৪ জুন ২০১৫/ প্রথম আলো 

কাজে যোগ দিলেন ছাত্রলীগের নেতারা
নিয়োগকৃত ছাত্রলীগের তিন নেতার মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও অপর একজনের বিরুদ্ধে দলীয় কর্মীদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ আছে। বাকি দুজন হচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আত্মীয়-স্বজন। এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক বলেন, নিয়োগপত্র দেওয়া হলেও শিক্ষকদের চাপের মুখে ছাত্রলীগের এক নেতাকে কর্মস্থলে যোগদান করতে দেওয়া হয়নি।

ঈদুল ফিতরের ছুটির আগে শেষ কার্যদিবসে ১৩ জুলাই চার ছাত্রলীগ নেতাসহ ছয়জনকে অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগ দেন উপাচার্য। ওই দিনই তাঁদের প্রত্যেককে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। ওই সময় যাঁদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল তাঁরা হচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি রাজিব চক্রবর্তী, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক সোহেল রানা, ছাত্রলীগের সহসভাপতি আবু সৈয়দ জিন্নাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল হোসেন ওরফে দীপু, উপাচার্যের একান্ত সচিব মো. ছানোয়ার হোসেনের স্ত্রী তাসনিমা খন্দকার এবং উপাচার্যের কার্যালয়ের সিনিয়র সর্টার মো. সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে মো. আবু হানিফ।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশনা ও শিক্ষকদের বিরোধিতা উপেক্ষা করে এ নিয়োগ দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। 
৪ আগস্ট ২০১৫/ প্রথম আলো

নিয়োগ বোর্ড নিয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ১
শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডকে কেন্দ্র করে গতকাল বৃহস্পতিবার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পক্ষের সঙ্গে সহসভাপতি পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে সাইদুর রহমান নামে ছাত্রলীগের এক কর্মী গুলিবিদ্ধসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন।
গুলিবিদ্ধ সাইদুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তাঁকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্র নেওয়া হয়। পরে তাঁকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সাইদুরের অবস্থা আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন তাঁর পক্ষের নেতা-কর্মীরা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের জন্য গতকাল উপাচার্যের বাংলোতে শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি মিজানুর রহমানের পক্ষের নেতা মো. হালিমের নেতৃত্বে কিছু নেতা-কর্মী দুপুর পৌনে ১২টার দিকে উপাচার্যের কার্যালয়ে গিয়ে তাঁকে এই বোর্ড স্থগিত করতে চাপ দেন। একপর্যায়ে তাঁরা সেখান থেকে সরে এসে প্রশাসন ভবনের ভেতরে হট্টগোল শুরু করেন। দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলামের পক্ষের নেতা শিশির ইসলামের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন কর্মী ঘটনাস্থলে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শিশির পিস্তল বের করে সহসভাপতি পক্ষের সিদ্দিকী আরাফাতকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। গুলিটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে সহসভাপতি পক্ষের সাইদুর রহমানের পায়ে লাগে। একপর্যায়ে প্রতিপক্ষের ধাওয়া খেয়ে সভাপতি পক্ষের কর্মীরা প্রশাসন ভবন থেকে বেরিয়ে গিয়ে দলীয় টেন্টে অবস্থান নেন। সেখানেও তাঁদের ওপর চঙাও হয় সহসভাপতি পক্ষ। এ সময় সংঘর্ষ বেধে গেলে লাঠিসোঁটার আঘাতে সভাপতি-সম্পাদক পক্ষের শিশির ইসলাম, কামরুজ্জামান সাগর, নোমান রবিন, আতাউর রহমান, রাজু আহমেদ এবং সহসভাপতি পক্ষের মো. হালিম, সিদ্দিকী আরাফাত, মো. সবুজ, মো. আলো, অনিক, জুবায়েরসহ ১৪ জন আহত হন।
১৮ ডিসেম্বর ২০১৫/ প্রথম আলো

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বিশেষ কর্মকর্তা’ পদে ছাত্রলীগের ১২ জন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বিশেষ কর্মকর্তার’ পদ তৈরি করে এবং নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই ছাত্রলীগের ১২ জন নেতাকে নিয়োগ দিয়েছেন উপাচার্য মীজানুর রহমান। তাঁদের মধ্যে দুজন সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা, অন্যরা এই বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা-কর্মী। গত ১৯ মার্চ উপাচার্যের আগের মেয়াদ শেষ হওয়ার এক মাস আগে ফেব্রুয়ারিতে অস্থায়ীভাবে ও চুক্তিভিত্তিক এই ১২ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের ওপর বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে। ২০ মার্চ মীজানুর রহমান দ্বিতীয় মেয়াদে আরও চার বছরের জন্য উপাচার্যের দায়িত্ব পান। এর আগে ২০১২ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ছাত্রলীগের ৩১ জন নেতা-কর্মী নিয়োগ পেয়েছেন। এর মধ্যে ২২ জন নিয়োগ পেয়েছেন সাবেক উপাচার্য মেসবাহউদ্দিন আহমেদের সময়ে ২০১২ সালে।
২৭ এপ্রিল ২০১৭/ প্রথম আলো 

শিক্ষক নিয়োগের প্রশ্নপত্র ফাঁসের চেষ্টা, সাবেক ছাত্রলীগ নেতাসহ আটক ১০
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করার পরিকল্পনার অভিযোগে বরিশালে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাসহ ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার গভীর রাত ও আজ শনিবার সকালে নগরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করে কোতোয়ালি মডেল থানার পুলিশ। আটক করা ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসে ব্যবহৃত বেশ কয়েকটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও নগদ দেড় লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
২৬ মে ২০১৮/ প্রথম আলো 

অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ১৪২ কর্মচারী নিয়োগ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে ১৪২ জনকে স্থায়ী ও অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাবশালী শিক্ষক-কর্মকর্তাদের আত্মীয়স্বজনের পাশাপাশি ছাত্রলীগের সাবেক নেতারাও রয়েছেন। এমনকি নানা অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত, অস্ত্রধারী এবং মামলার আসামিও নিয়োগ পেয়েছেন। অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় এই নিয়োগ হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ জন্য একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ডামাডোলকে বেছে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত ১৭ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১৯তম সিন্ডিকেট সভায় নিয়োগটি চূড়ান্ত হলেও ওই সভায় নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের নামই উপস্থাপন করা হয়নি।

তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বহিষ্কৃত, অস্ত্রধারী ও মামলার আসামি অন্তত তিনজন নিয়োগ পেয়েছেন। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ছাত্রলীগের সাবেক নেতা-কর্মীদের মধ্যে নিয়োগ পেয়েছেন অন্তত ১৭ জন। এ ছাড়া সিন্ডিকেট সদস্য, রেজিস্ট্রার ও মসজিদের খতিব, প্রভাবশালী শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সন্তানসহ আত্মীয়স্বজন নিয়োগ পেয়েছেন ১৪ জন।
২৮ জানুয়ারি ২০১৯/ প্রথম আলো 


নিয়োগ আটকাতে স্বর্ণপদক পাওয়া প্রার্থীকে ‘অপহরণ’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের স্নাতকে সিজিপিএ-৪-এর মধ্যে ৩ দশমিক ৮৮ এবং স্নাতকোত্তরে ৩ দশমিক ৯৬ পেয়েছিলেন এমদাদুল হক। দুটি পরীক্ষাতেই প্রথম হয়েছিলেন তিনি। এ জন্য অর্জন করেন ‘প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক’। কৃতিত্বপূর্ণ ফলের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মীর বাধায় শিক্ষক নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি তিনি। মৌখিক পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে থেকে তাঁকে ‘অপহরণ’ করে নিয়ে যান ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মী। দিনভর আটকে রেখে তাঁকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে টাকা ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেন। পরে ‘শিবিরকর্মী’ আখ্যা দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন। গত ২৭ মার্চ বুধবার এ ঘটনা ঘটে।
১ এপ্রিল ২০১৯/ প্রথম আলো

ঢাবির রোকেয়া হলে ২১ লাখ টাকা নিয়োগ-বাণিজ্যের অভিযোগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের হল সংসদের সহসভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও হল শাখা ছাত্রলীগের দুই নেত্রীর বিরুদ্ধে নিয়োগ-বাণিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছেন হলের কয়েকজন ছাত্রী। হলে নিরাপত্তা প্রহরী, পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ কয়েকটি পদে নিয়োগ দিতে তিন ব্যক্তির কাছ থেকে ২১ লাখ টাকা নিয়েছেন তাঁরা, এমন অভিযোগ করেছেন ছাত্রীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে আজ মঙ্গলবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন রোকেয়া হলের প্রায় ১৫ জন ছাত্রী। ছাত্রীদের অভিযোগের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্র ফেডারেশনের কয়েকজন নেতা-কর্মীও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯/ প্রথম আলো 

হাবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবনে ছাত্রলীগের তালা
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০ শিক্ষাবর্ষের øাতক প্রথম বর্ষের ২ হাজার ২শ’ শিক্ষার্থীর ওরিয়েন্টেশন ছিল সোমবার। কয়েকদিন ধরে ক্যা¤পাসে ছিল সাজ সাজ রব। নির্মাণ করা হয়েছিল নবীন শিক্ষার্থীদের বরণের জন্য মঞ্চ ও গেট। ক্যা¤পাসজুড়ে স্থাপন করা হয় বিভিন্ন ফেস্টুন।

কিন্তু রোববার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা ১৩ দফা দাবি পূরণ না হওয়ায় ওরিয়েন্টেশনের মঞ্চ ভাংচুর করে। পরের দিন সোমবার ছাত্রলীগের আরেকটি অংশের নেতারা ১১ দফা দাবি আদায়ের জন্য বিক্ষোভ মিছিল ও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়। দু’পক্ষের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ক্লাসরুম ও ল্যাব সংকট দ্রুত সমাধান করা, ক্রেডিট ফি কমানো, 
যানবাহনের সংখ্যা বাড়ানো, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের সংখ্যা বাড়ানো ইত্যাদি।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগ নেতা জানান, এসব দাবি কিংবা ওরিয়েন্টেশন কোনো বিষয় না। মূল বিষয় হল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের নোটিশে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেখানে প্রার্থীর তুলনায় খুবই অল্পসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলেই এ আন্দোলন।
২৮ জানুয়ারি ২০২০/ যুগান্তর 

কুয়েটে ছাত্রলীগই শেষ কথা
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) হলের সিট বরাদ্দ, ডাইনিং ও কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগসহ প্রায় সব ক্ষেত্রেই রয়েছে ছাত্রলীগের খবরদারি। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টি ছাত্র হল চলে ছাত্রলীগ নেতাদের কথামতো। মেধার ভিত্তিতে সিট বরাদ্দের কথা থাকলেও নেতাদের ‘দয়া’ ছাড়া কোনো শিক্ষার্থী সিট পায় না।

জোর করে ডাইনিং ম্যানেজারের পদও বাগিয়ে নেন নেতারা। বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ নিয়েও বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে। এছাড়া রয়েছে ক্যা¤পাসে মাদক বাণিজ্য ও ভিন্নমতের ‘ট্যাগ’ দিয়ে ছাত্রদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ। কুয়েটের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলে এসব অভিযোগ পাওয়া গেছে। 
০৬ ডিসেম্বর ২০২১/ যুগান্তর 

রাবিতে ছাত্রলীগের কে কোন পদে নিয়োগ পেলেন?
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্য ১৩৭ জনের মধ্যে ৪৭ ছাত্রলীগ -যুবলীগ নেতাকর্মী নিয়োগ পেয়েছেন। যাদের অধিকাংশই নিয়োগ পেয়েছেন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে।জাগো নিউজের হাতে আসা একটি তালিকা থেকে বিষয়টি জানা গেছে।

নিয়োগ পাওয়াদের মধ্যে রয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক কমিটির ৩১, মহানগর 
ছাত্রলীগের ৯ এবং জেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সাত নেতাকর্মী।তাদের মধ্যে ফিশারিজ বিভাগের প্রভাষক পদে নিয়োগ পেয়েছেন মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ স¤পাাদক তাসকিন পারভেজ। কর্মকর্তা পদে পাঁচজনের মধ্যে রাবি ঘাদানিকের সাবেক সভাপতি মতিউর রহমান, রাবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের ছাত্রী বিষয়ক স¤পাদক সোনিয়া তাসনীম, রাবি ছাত্রলীগ কর্মী তারিফুজ্জামান, মুন্নুজান হল ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ স¤পাদক 
আয়েশা সিদ্দিকা নিয়োগ পেয়েছেন। 
০৬ ডিসেম্বর ২০২১/ যুগান্তর

ছাত্রলীগের টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ও দখল

 


আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শুরু হয়েছে ছাত্রলীগের টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ও দখল। দেশবাসী তা নীরবেই মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে। ছাত্রলীগের একটি কেন্দ্র থেকে শুরু করে একটি ইউনিট পর্যন্তও বাকী নেই যেখানে তারা এমনসব কাজ করে না। মূলত বলতে গেলে এটাই ছাত্রলীগ কর্মীদের যোগ্যতা। পত্র-পত্রিকায় এসব কর্মকান্ডের শুধু সেই ঘটনাই আসে যেসব ঘটনাই দুপক্ষের মারামারি বা খুনোখুনি হয়েছে। 

গত ১৩ বছরে অর্থাৎ ২০০৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ছাত্রলীগ পরিণত হয় এক টেন্ডার, চাঁদাবাজ ও জবর দখলকারী একটি সংগঠন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন ও সিনোপসিসে দেখা যায়, শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতির পরিবর্তে টেন্ডার, চাঁদাবাজি ও জবর দখলই হয়ে উঠেছে ছাত্রলীগের মূলমন্ত্র। বিগত ছয় বছরে ছাত্রলীগের অন্তকোন্দলে খুন হওয়া ১৪৫ জনের মধ্যে বেশির ভাগই অর্থের কারণে। এর পেছনের কারণ চাঁদাবাজি না হয় টেন্ডারবাজি। ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দও সীমাহীন দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের সাথে জড়িয়ে পড়েছে। ছাত্রলীগ খুন, টেন্ডার, চাঁদাবাজি ও ধর্ষণের রক্ষাকবচ হিসেবে “জয় বাংলা” স্লোগানকে ব্যবহার করে আসছে।

চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা আর টাকার বিনিময়ে কমিটি গঠন ছাত্রলীগের আয়ের প্রধান উৎস। অভিযোগ আকারে বিষয়গুলো দীর্ঘদিন ধরে এলেও এবার ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতৃত্ব সেটাই প্রমাণ করলেন। এসব অভিযোগে এবার তাঁদের নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে আলোচনা চলছে।

৮ সেপ্টেম্বর রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার ও সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের যৌথ সভায় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতারা গণমাধ্যমকে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথাও বলেছেন। এরপর ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী দুদিন গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েও ফিরে আসেন।

সর্বশেষ বৃহস্পতিবার গোলাম রাব্বানী ক্ষমা চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লেখেন। চিঠিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজ থেকে টাকা চাওয়ার অভিযোগ ও গুলিস্তানের কার্যালয়ের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য তুলে ধরেন তিনি। ২০ জুলাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলনে দেরি করে উপস্থিত হওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করেছেন। রাব্বানী দাবি করেন, তাঁরা বারবার পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছেন।

জানা গেছে, কমিটি বাণিজ্য আর মাদক ছাড়াও ছাত্রলীগ নেতাদের ওপর প্রধানমন্ত্রীর ক্ষুব্ধ হওয়ার বড় কারণ হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প থেকে বড় অঙ্কের টাকা চাওয়ার যে অভিযোগ ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে, তাতেও ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটিতে সাধারণ সম্পাদকের পদ বাগাতে অর্থ লেনদেনের বিষয় এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছাত্রলীগের অফিস কক্ষে মাদক পাওয়ার বিষয়টি।

গত ১৩ মে সম্মেলনের এক বছরের মাথায় ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেন ছাত্রলীগ সভাপতি–সাধারণ সম্পাদক। এরপর থেকেই কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ না পাওয়া নেতারা আন্দোলন শুরু করেন। অভিযোগ ওঠে, অর্থের বিনিময়ে যোগ্যদের বাদ দিয়ে মাদকসেবী, মাদক ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, শিবির ও ছাত্রদলের নেতাদের কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। এক মাসের বেশি সময় ধরে চলমান সেই আন্দোলনের রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন বিতর্কে জড়ালেন দুই শীর্ষ নেতা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নকাজে টাকা দাবি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ যেসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পেয়েছে, তাদের কাছ থেকে বরাদ্দের ৪ থেকে ৬ শতাংশ নিয়ে ছাত্রলীগকে দেওয়ার দাবি করেছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক—এমন অভিযোগ তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফারজানা ইসলাম। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তিনি এ অভিযোগ জানিয়েও এসেছেন। তবে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর দাবি, কেন্দ্রীয় কমিটি নয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সঙ্গে উপাচার্যের ছেলে ও স্বামীর এই লেনদেন হয়েছে।

উপাচার্য ফারজানা ইসলাম গতকাল প্রথম আলোর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিকে বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে ইতিমধ্যে জানিয়েছি যে তারা আমাকে হুমকি–ধমকি দিয়েছে। এই হুমকিরই একটি প্রকাশ হিসেবে এখন আমার স্বামী ও ছেলের ওপর দোষ দিতে চাচ্ছে। তারা মনে করেছে, এতে আমি ভয় পাব। কিন্তু এটা একেবারে ডাহা মিথ্যা কথা। টাকা লেনদেনের বিষয়ে আমার ও আমার পরিবারের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’

গত মে মাসে উন্নয়ন প্রকল্পের প্রথম ধাপে ছয়টি আবাসিক হল নির্মাণের জন্য ৪৫০ কোটি টাকার দরপত্রের শিডিউল বিক্রির সময় উপাচার্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ছিলেন। সে সময় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন উল্লেখ করে উপাচার্য প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাসপাতালে আমি জীবন–মরণ লড়াই করছিলাম। সেখানেও তারা এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়েছিল। তারা হাসপাতালেও গেল, বাসায়ও এল। কিন্তু তাদের প্রস্তাব আমি কখনোই শুনব না। তাদের কথা না মানায় তারা অসন্তুষ্ট হয়ে ফিরে গিয়েছিল।’

এদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। গতকাল বিকেলে শাখা ছাত্রলীগের উপ–দপ্তর সম্পাদক এম মাইনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গোলাম রাব্বানী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সম্পর্কে যে বিবৃতি দিচ্ছেন, তা সম্পূর্ণ অসত্য। গত ৮ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের আলোচনার বিষয়ে তাঁরা অবগত ছিলেন না।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি নিয়ে বাণিজ্য
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান,বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত জেলা সমমর্যাদার দুটি কমিটি ঘোষণা করেছে। এর একটি কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি। গত ১৩ জুলাই ঘোষণার পর থেকেই কমিটি দিতে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ ওঠে। সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলামের সঙ্গে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির কথোপকথনের ফাঁস হওয়া একটি অডিওতে তার সত্যতাও পাওয়া যায়। প্রায় পাঁচ মিনিটের ফাঁস হওয়া অডিওতে নেতা হওয়ার জন্য টাকার দেনদরবার, কমিটি ভাঙা ও নতুন কমিটি আনাসহ বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে।

তবে অডিওর বিষয়টি অস্বীকার করে রাকিবুল ইসলাম দাবি করেন, ‘ওই কণ্ঠ আমার নয়। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি।’

ছাত্রলীগের একটি সূত্র বলছে, কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি ঘোষণার সময় আওয়ামী লীগের এক শীর্ষস্থানীয় নেতা তাঁর পছন্দের ব্যক্তিকে শীর্ষ দুটি পদের একটি দিতে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বলেছিলেন। কিন্তু তাঁরা তা না করে অর্থের বিনিময়ে বর্তমান নেতৃত্বকে নিয়ে আসেন।

দেশের প্রায় সব বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ও শহরে চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজিতে জড়িয়ে পড়ে ছাত্রলীগ। চাঁদা না দেয়ায় অনেক প্রতিষ্ঠান ও দোকান বন্ধ করে দেয়া হয়। রাজধানীর শিক্ষাভবন, গণপূর্ত ভবন, খাদ্য ভবন থেকে হাজার হাজার কোটি টাকার টেন্ডার বাগিয়ে নেয় ছাত্রলীগ। নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি নিয়ে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষও হয়েছে।

চাঁদা দিতে দেরি বা অপরাগতা প্রকাশ করায় ঢাবি, জাবি, রামেক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিাপ্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন জেলা শহরের বড় বাজেটের উন্নয়ন কাজ বন্ধ রাখা হয়। ছাত্রলীগের দৌরাত্ম্যে ৭০-৮০টি কলেজের উন্নয়ন অনিশ্চিত হয়ে যায়। ৬৫৫ কোটি ১২ লাখ টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাগিয়ে নেয় ছাত্রলীগ।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক, শিক্ষাবিদ ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা মনে করছেন, সম্পদ উপার্জনে অধিক মনোযোগী হওয়াই ছাত্রলীগের বেপরোয়া ও নিয়ন্ত্রণহীন হওয়ার মূল কারণ। অর্থবিত্ত অর্জনের লক্ষ্য থেকেই বিভিন্ন সময় তারা বিভিন্নভাবে ব্যবহৃত হয়েছে। অন্যদিকে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা না নেয়া এবং ফৌজদারি অপরাধের ক্ষেত্রে আইনানুযায়ী শাস্তি না হওয়ায় তাদের অপরাধমূলক কর্মকান্ড কমছে না।

পত্রপত্রিকায় চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি নিয়ে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ ও সাধারণ মানুষকে আক্রমণের যে কয়টি ঘটনা রিপোর্ট হয়েছে সে আলোকে ২০২১ সালে ১৫ টি, ২০২০ সালে ১২টি, ২০১৯ সালে ১২টি ২০১৮, সালে ১০টি, ২০১৭ সালে ৩২টি, ২০১৬ সালে ১৯টি, ২০১৫ সালে ২৬টি, ২০১৪ সালে ২২টি এবং ২০১৩ সালে ৩১টি।
 
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ নামের সঙ্গে ‘টেন্ডারবাজ’ তকমা লেগে যায়। চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজিতে সংগঠনের অনেক নেতা ও কর্মীর যুক্ত থাকার খবরও বরাবর এসেছে সংবাদমাধ্যমে। ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব একাধিকবার এ ব্যাপারে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। ‘জোর যার মুল্লুক তার’ স্টাইলে নিজেদের কাজ করেছে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ‘গুণধর’ নেতা ও কর্মীরা। তাদের নিরস্ত করা কারো পক্ষেই সম্ভব হয়নি।

দলের শীর্ষ নেতৃত্বের খবরদারি যারা হেলাভরে অগ্রাহ্য করে তাদের প্রতিহত করার শক্তিও বোধ হয় কারো থাকে না। ফলে অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠা এই চক্রটি সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে। টাকার বিনিময়ে ভাড়া খাটে। একসময়ের উজ্জ্বল ছাত্ররাজনীতি কলঙ্কিত হয়। যেমনটি ঘটেছে ১২ মার্চ ২০১৫ সালে বিদ্যুৎ ভবনে। ৭৩ লাখ টাকার একটি টেন্ডার জমা দেওয়া নিয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়েছে। গোলাগুলিতে আহত একজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দিয়েছে পুলিশ।

আওয়ামী লীগ দ্বিতীয়বার সরকার গঠনের পরও ক্ষমতাসীনদের সহযোগী সংগঠনগুলোর সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বন্ধ করা যায়নি। মুছে ফেলা যায়নি তাদের ‘টেন্ডারবাজ’ পরিচয়। বরং ‘কয়লা ধুলে ময়লা যায় না’ কথাটির সত্যতা যেন আবারও একবার প্রমাণিত হয়ে গেল ছাত্রলীগ নামধারী কিছু সন্ত্রাসীর কর্মকান্ডে। প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, একটি ৪২ লাখ ও একটি ৩১ লাখ টাকার কাজের জন্য নবাব আবদুল গনি রোডে অবস্থিত বিদ্যুৎ ভবনে দুটি কম্পানির পক্ষ থেকে দরপত্র জমা দেওয়া হয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের এক ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে এক পক্ষ এবং পরে অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দরপত্র জমা দিতে গেলে আগের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হয়। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। শুরু হয় গোলাগুলি। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা শুরু থেকেই বলে আসছেন, ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সরকারের জনপ্রিয়তা প্রশ্নবিদ্ধ করতে বড় ভূমিকা রাখছে। কিন্তু ক্ষমতাসীন দল বা সহযোগী সংগঠনগুলো এসব দিকে দৃষ্টি দেওয়ার সময় পাচ্ছে বলে মনে হয় না। বিদ্যুৎ অফিসে ঘটে যাওয়া ঘটনা প্রমাণ করে, ছাত্রলীগ এখনো বেপরোয়া চরিত্রেই রয়ে গেছে। টেন্ডারবাজি থেকে মুক্ত হতে পারেনি সংগঠনটি।

শুধু টেন্ডারবাজি নয়, ছাত্রলীগ নামধারীদের চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডেও দেশের মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত। দেশে একজন ব্যবসায়ী বাকি নেই যিনি বাংলাদেশে ব্যবসা করেন অথচ ছাত্রলীগকে চাঁদা দেন না। যত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হোন না কেন, চা কিংবা বাদাম বিক্রেতারাও এর বাইরে নন।

বাড়ি ঘর নির্মান থেকে শুরু করে সকল কন্সট্রাকশন কাজে চাঁদা দেয়া বাধ্যতামূলক। দেশে চাঁদা না দিয়ে কোনো অবকাঠামোর কাজ হয় নি। মানুষকে শোষন করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছাত্রলীগ নেতারাও আজ কোটিপতি।

ছাত্রলীগের শিক্ষক নির্যাতন

কুয়েটের শিক্ষক মৃত ড. মো. সেলিম


কুয়েটে লালনশাহ হলের ডিসেম্বর'২১ মাসের খাদ্যব্যবস্থাপক (ডাইনিং ম্যানেজার) নির্বাচন নিয়ে কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ স¤পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান তার অনুগতকে নির্বাচিত করতে মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) ড. মো. সেলিমের অফিসে ঢুকে অশালীন আচরণ ও মানসিক নির্যাতন করেন। পছন্দের ব্যক্তিকে ওই পদে বসাতে ড. সেলিম হোসেনকে বেশ কয়েকদিন ধরে নিয়মিত হুমকি দিচ্ছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বে কয়েকজন ছাত্র ক্যাম্পাসের রাস্তায় ড. সেলিম হোসেনকে জেরা করে এবং তাকে অনুসরণ করে তার ব্যক্তিগত কক্ষে (তড়িৎ প্রকৌশল ভবন) ঢোকে।

সিসি টিভি ফুটেজে দেখা যায়, তারা প্রায় আধঘণ্টা ওই শিক্ষকের সঙ্গে দরজা বন্ধ করে অবস্থান করে। এরপর ড. সেলিম হোসেন দুপুরে খাবারের খাওয়ার জন্য বাসায় যান। দুপুর ২টার দিকে তার স্ত্রী লক্ষ্য করেন ড. সেলিম বাথরুম থেকে বের হচ্ছেন না। পরে দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে, কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় ছাত্রলীগের সেক্রেটারিসহ চারজনকে আজীবন বহিষ্কার করে কুয়েট কর্তৃপক্ষ।  

পৃথিবীর সূচনা লগ্ন থেকে জাতি গড়ার কারিগর শিক্ষিকদের সবাই শ্রদ্ধার পাত্র হিসেবে দেখেন, কিন্তু ছাত্রলীগ সেই শ্রদ্ধার সর্বোচ্চ স্থানে আঘাত করেছে, গায়ে হাত তুলেছে, মুহুর্মুহ আঘাতে প্রজন্ম গড়ার কারিগর শিক্ষকের দেহ রক্তাক্ত হয়েছে বারবার। বিভিন্ন পত্রিকার প্রতিবেদন ও সিনোপসিসে দেখা যায় ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত শিক্ষক লাঞ্ছিত হয়েছেন অন্তত ১৫৭ জন। সাস্টের জাফর ইকবাল স্যারের স্ত্রী ড. ইয়াসমীন হককে হেনস্তার প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, আমার গলায় দড়ি দিয়ে মরা উচিত।
 
২০১৪ সালে অন্তত ০৯ জন শিক্ষক লাঞ্ছিত ও হেনস্তার শিকার হন। ২০১৫ সালে অন্তত ১৪ জন শিক্ষক লাঞ্ছিত ও হেনস্তার শিকার হন। ২০১৬ সালে ২৪ শিক্ষক লাঞ্ছিত ও হেনস্তার শিকার হন। ২০১৭ সালে শিক্ষক লাঞ্ছিত অন্তত ১৫ জন। ২০১৮ সালে শিক্ষক লাঞ্ছিত ২১ জন ও ২০১৯ সালে হেনস্তার শিকার হন ২৩ জন শিক্ষক।

২০১৮ ও ২০১৯ সালে ৪৪ জন শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হলো কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ইস্যু করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করা হয়। দেশব্যাপী কোটাবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সমর্থনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোচ্চার ছিলেন মাইদুল ইসলাম। ফলে ২৩ জুলাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ইফতেখার উদ্দিন আয়াজ তথ্য-প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে হাটহাজারী থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। পরে সেটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়। 

এই মামলায় মাইদুল ইসলামকে জেলে যেতে হয় এবং তিনি চাকুরিও হারান। ঢাবিসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগ কোটা সংস্কারের পক্ষে থাকা শিক্ষকদের উপর হামলা করে লাঞ্ছিত করে। ২০২০ ও ২০২১ সালে শিক্ষক নির্যাতনের ঘটনা ঘটে ৩০টি। এর মধ্যে সবচেয়ে মর্মান্তিক ছিল কুয়েটের ড. সেলিম হোসেন স্যারের ঘটনা। এই ঘটনায় তিনি ইন্তেকাল করেন।  

ছাত্রলীগ কর্তৃক শিক্ষক নির্যাতনের কিছু উলে­খযোগ্য ঘটনা
৩০ জুন ২০১৮; কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার সময় নিজের পরিচয় দেয়ার পরও রেহাই পাননি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান লাইব্রেরিয়ান এবং তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক ড. জাভেদ আহমেদ। (রোববার) ১৫ জুলাই ২০১৮ সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, মামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে আবারও হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ।

‘ছাত্রলীগ কর্মী’র নেতৃত্বে শিক্ষককে পিটিয়ে আহত: 
০৯ আগস্ট ২০১৭ বরিশালের মুলাদী কলেজের এক শিক্ষককে গতকাল মঙ্গলবার পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। এ ঘটনায় মো. শাওন নামের এক ছাত্রসহ আটজনের নামে মামলা করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। শাওন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বহিরাগত ১০-১৫ জনকে সঙ্গে নিয়ে কলেজে প্রবেশ করেন। তাঁরা কলেজের স্নাতক ভবনের ২০২ নম্বর কক্ষে গিয়ে পাঠদানরত ইসলামের ইতিহাসের শিক্ষক আবদুল আলিমের উপর চড়াও হন। শিক্ষার্থীদের সামনেই তাঁকে বেঞ্চের পায়া এবং রড দিয়ে পেটানো হয়। মেঝেতে লুটিয়ে পড়লে আলিমকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি-লাথি মারা হয়। তাঁকে রক্ষা করতে গিয়ে বাংলা বিভাগের শিক্ষক হাফিজ আহম্মেদ শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হন।

বাজিতপুরে মাদ্রাসার সুপারকে মারধর
০৭ জুন ২০১৭ তারিখে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলায় পিরিজপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্টকে মারধর করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ঝিনুকের নেতৃত্বে তাঁর ওপর হামলা হয়। স্থানীয় নেতা-কর্মীরা তাঁর ওপর হামলা চালান বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই সুপারের নাম আবু বক্কর সিদ্দিক। হামলায় কয়েকজন আহত হয়েছেন।’

পাংশায় শিক্ষককে রড ও হাতুড়িপেটা:
১৪ আগস্ট ২০১৭ রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায় পাংশা জর্জ পাইল মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে গত শনিবার রাতে রড ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আহত শিক্ষকের নাম তপন কুমার সরকার (৪৮)। তিনি ওই বিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের সহকারী শিক্ষক। তাঁর বাড়ি পাংশা পৌর এলাকার নারায়ণপুর গ্রামের দত্তপাড়া এলাকায়।

(১৩ মার্চ ২০১৬)  জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার রাতে প্রাধ্যক্ষ ওই হলের গণরুম পরিদর্শনে গেলে এ ঘটনা ঘটে। শুক্রবার রাত সাঙেনয়টার দিকে তাঁদের খোঁজখবর নিতে প্রাধ্যক্ষ ওবায়দুর রহমান মীর মশাররফ হোসেন হলের গণরুমে যান। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁকে দেখে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক ইকরাম উদ্দিনসহ ছাত্রলীগের সাত-আটজন নেতা-কর্মী ওবায়দুর রহমানকে গালিগালাজ করেন।

(০৯ আগস্ট ২০১৬) কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাসানবাগ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ দুজনকে গতকাল সোমবার মারধর করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ও সদর থানা যুবলীগের নেতারা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, শিক্ষকদের লাঠি ও হকিস্টিক দিয়ে পেটানো হয়েছে বলে লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন।

ছাত্রলীগের হাতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় শিক্ষকদের ডাকা কর্মবিরতিতে অচল বুয়েট
১৪ এপ্রিল ২০১৫ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় শিক্ষকদের ডাকা কর্মবিরতিতে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে বুয়েট। আগামী শনিবারের মধ্যে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়ার বিকল্প থাকবে বলে জানিয়েছে বুয়েট শিক্ষক সমিতি। এদিকে লাঞ্ছিত শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলমকে অপসারণের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মানববন্ধন করেছে বুয়েট ছাত্রলীগ।

ঢাবি শিক্ষক জোবাইদা নাসরীনকে ছাত্রলীগ নেত্রীদের মারধর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ছাত্রলীগ নেত্রীদের সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন হামলার শিকার হয়েছেন। গত রোববার রাতে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের সময় তার ওপর এই হামলার ঘটনা ঘটে। তিনি আরও বলেন, 'ছাত্রলীগ নেত্রীরা আমার চুল ধরে টানাটানি করে। আমার শরীরে আঘাত করে। আমি বিষয়টি হল প্রশাসনকে জানিয়েছি। হল প্রশাসন বলছে, ব্যবস্থা নেবে। এ ছাড়া এ বিষয়ে ঢাকা 
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকেও অবহিত করেছি।'
০৮ জানুয়ারি, ২০২০/ যায়যায়দিন

নারী প্রভাষকের হিজাব টেনে খুলে নিলেন ছাত্রলীগ নেতা
টাঙ্গাইলের নাগরপুর সরকারি কলেজের সাবেক ভিপিসহ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ওই কলেজের এক নারী প্রভাষককে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহ¯পতিবার রাত ৮টায় উপজেলা শহরের বাজারে কেনাকাটা করাকালে ওই প্রভাষক এ ঘটনার শিকার হন। পরে শুক্রবার সকালে থানায় ওই প্রভাষকের করা মামলায় বাবু নামে এক ছাত্রলীগকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ মামলার অপর আসামিরা হলেন, নাগরপুর সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ও কলেজ ছাত্রলীগ শাখার সাবেক সাধারণ স¤পাদক আল-মামুন, উপজেলা আওয়ামী লীগের উপ প্রচার ও প্রকাশনা স¤পাদক সাদিকুর রহমান বিপ্লব।
২০ মার্চ ২০২০/ জাগো নিউজ

চাঁদা না দেয়ায় শিক্ষককে পেটালো ছাত্রলীগ
তিন লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগে ঝালকাঠির নলছিটি পৌর ছাত্রলীগের চার নেতার বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। বৃহ¯পতিবার রাতে স্থানীয় প্যালেস্টাইন টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের প্রভাষক মো. মামুন কবির বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলেন, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মো. কাওসার সরদার (সালমান), যুগ্ম স¤পাদক রাইসুল রবিন (রবিন প্যাদা), সাংগঠনিক স¤পাদক তানভীর হোসেন ও ছাত্রলীগ নেতা শুভ দাস। মামলা দায়েরের পর বৃহ¯পতিবার রাতে শহরের কলবাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে শুভ দাসকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
২১ নভেম্বর ২০২০/ যমুনা টিভি

রাবিতে ছাত্রলীগের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, শিক্ষকদের গুলি করার হুমকি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট সভা স্থগিত করার জন্য উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলতে গেলে চাকরিপ্রত্যাশী ছাত্রলীগের সাবেক-বর্তমান নেতা–কর্মীরা ধাক্কা দিয়ে শিক্ষকদের সরিয়ে দিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার সকালে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের জটলার মধ্যে থেকে এক ব্যক্তি শিক্ষকদের গুলি করে দেওয়ার হুমকি দেন।
০৪ মে ২০২১/ প্রথম আলো

আসিফ নজরুলকে গণপিটুনি দিয়ে বিতাড়িত করা হবে: লেখক ভট্টাচার্য
ছাত্রলীগের সাধারণ স¤পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল শিক্ষক নামের কলঙ্ক। গণপিটুনি দিয়ে আসিফ নজরুল গংদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাটি থেকে বিতাড়িত করা হবে। মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) অধ্যাপক আসিফ নজরুল তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে লেখেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে কাবুল বিমানবন্দর ধরনের দৃশ্য বাংলাদেশেও হতে পারে। ওই স্ট্যাটাসের প্রতিক্রিয়ায় ছাত্রলীগের নেতারা এসব কথা বলেন। 
১৮ আগস্ট ২০২১/ জাগো নিউজ

ছাত্রলীগ নেতার হুমকিতে হল প্রাধ্যক্ষ ও ৪ আবাসিক শিক্ষকের পদত্যাগ
বিজয় দিবসে বিশেষ খাবারের আয়োজনের সমস্ত টাকা দাবি করেন ছাত্রলীগের সাধারণ স¤পাদক মো. রাকিবুল হাসান রাকিব। তাদের সেই টাকা না দেওয়ায় ছাত্রলীগের হুমকি-ধমকিতে অপমানিত বোধ করায় পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দোলনচাপা হলের প্রাধ্যক্ষ (প্রভোস্ট) ও ৪ আবাসিক শিক্ষক (হাউজ টিউটর)।

বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে তারা পৃথক পদত্যাগপত্র জমা দেন বলে জানিয়েছেন ওই শিক্ষকরা। জানা গেছে, ১৪ ডিসেম্বর বিকেলে এ ঘটনাটি ঘটে। এরপর ১৫ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট ও হাউজ টিউটরদের কয়েক দফা বৈঠক হলেও কোনো সমাধান না হওয়ায় তারা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন।
১৬ ডিসেম্বর ২০২১/ ডেইলি স্টার        
          

ছাত্রলীগের নারী ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানি

 


ছাত্রলীগ বাংলাদেশের জন্য অভিশাপের নাম। এই সংগঠন একদিকে যেমন আমাদের যুবসমাজকে অন্যায়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে তাদের অন্যায় ও জুলুমের ফলে আমাদের জনজীবন বিষাক্ত হয়ে উঠছে। ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে টিলাগড় এলাকায় এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া এক গৃহবধূকে ক্যা¤পাস থেকে তুলে ছাত্রাবাসে নিয়ে ধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠে। ঘটনার পরদিন তার স্বামী শাহপরাণ থানায় ছাত্রলীগকর্মী সাইফুর রহমানকে প্রধান আসামি করে ছয়জনের নাম উলে­খসহ অজ্ঞাত আরও দুই-তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই ঘটনা দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে। প্রতিবাদে সরব হয় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী ও অধিকার সংগঠন। এই ঘটনায় ৮ আসামির মধ্যে সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেকুল ইসলাম তারেক ও অর্জুন লস্কর, মিজবাহুল ইসলাম রাজন ও আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ১৯ বছর বয়সী ওই নববধূকে ধর্ষণ করে। রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান মাসুম ধর্ষণে সহযোগিতা করে। ৮ আসামির সকলেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। বর্তমানে তারা সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক রয়েছে।

২০১৪ থেকে ২০২১ পর্যন্ত গণমাধ্যমে  প্রকাশিত প্রতিবেদন ও সিনোপসিস অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, এ সময়ে ছাত্রলীগের হাতে ছাত্রীরা-নারীরা ধর্ষিত, নির্যাতিত, শ্লীলতা হারিয়েছেন ও উত্যক্তের শিকার হয়েছেন অন্তত ৩০৯  জন। এমনকি শিক্ষিকা থেকে শুরু করে স্কুলের ইউনিফর্ম পরিহতি ছাত্রী ও শিশুরাও রেহাই পায়নি তাদের হাত থেকে। ২০১৫ সালের ২৬ জুলাই থেকে জানুয়ারি ২০১৮ পর্যন্ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, ছাত্রলীগের বহিষ্কৃতদের মধ্যে ১১৩ জন ধর্ষণ, নারী নির্যাতন ও বখাটেপনার অভিযোগে অভিযুক্ত।
 
২০১৮ সালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সাতই মার্চ উপলক্ষে আজ আওয়ামী লীগের জনসভায় আসা নেতা-কর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছে ভিকারুন্নেসা নুন স্কুল এন্ড কলেজের কয়েকজন ছাত্রী। এসময় তাদের যৌন হয়রানি ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। পরে কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাদের উদ্ধার করতে সামর্থ হয়। একইভাবে নিগ্রহের শিকার হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীও।
 
অদিতি বৈরাগীর হৃদয় বিদারক ফেসবুক স্ট্যাটাস
আওয়ামী নেতা-কর্মীদের হাতে যৌন হয়রানির শিকার ভিকারুন্নেসা নুন স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্রী অদিতি বৈরাগী তার ফেসবুকে লিখেছেন- “শান্তিনগর মোড়ে এক ঘন্টা দাড়ায়ে থেকেও কোনো বাস পাইলাম না। হেটে গেলাম বাংলামটর। বাংলামটর যাইতেই মিছিলের হাতে পড়লাম। প্রায় ১৫-২০ জন আমাকে ঘিরে দাড়াইলো। ব্যস! যা হওয়ার থাকে তাই। কলেজ ড্রেস পড়া একটা মেয়েকে হ্যারাস করতেসে এটা কেউ কেউ ভিডিও করার চেষ্টা করতেসে। কেউ ছবি তোলার চেষ্টা করতেসে। আমার কলেজ ড্রেসের বোতাম ছিড়ে গেসে । ওড়নার জায়গাটা খুলে ঝুলতেসে। ওরা আমাকে থাপড়াইসে। আমার শরীরে হাত দিসে। আমার দুইটা হাত এতগুলা হাত থেকে নিজের শরীরটাকে বাচাইতে পারে নাই। একটা পুলিশ অফিসার এই মলেস্টিং চক্রে ঢুকে আমাকে বের করে এন্ড একটা বাস থামায়ে বাসে তুলে দেয়। বাকিটা পথ সেইফ্লি আসছি। প্রচন্ড শরীর ব্যথা ছাড়া আর কোনো কাটাছেড়া নাই। মেন্টালি ভয়াবহ বিপর্যস্ত বাট শারীরিক ভাবে ভালো আছি। আমি এই শুয়োরদের দেশে থাকব না। জয় বাংলা বলে যারা মেয়ে মলেস্ট করে তাদের দেশে আমি থাকব না। থাকব না। থাকব না”

২০১৫ সালের ১৪ এপ্রিল বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসএসসিতে কয়েকজন নারীকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
সিলেটের এমসি কলেজ কেন্দ্রে স্নাতক পরীক্ষা দিয়ে বের হয়ে ছাত্রলীগ নেতা বদরুলের হামলার শিকার হন শিক্ষার্থী খাদিজা ২০১৬ সালের ৩ অক্টোবর সিলেটের এমসি কলেজ কেন্দ্রে স্নাতক পরীক্ষা দিয়ে বের হয়ে হামলার শিকার হন সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক (পাস কোর্স) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী খাদিজা। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল আলমের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার মাথার খুলি ভেদে করে মস্তিষ্কও জখম হয়। এই ঘটনায় বদরুলকে বহিষ্কার ও আদালত তাকে যাবজ্জীবন দিয়েছে। (প্রথম আলো, যুগান্তর, ইত্তেফাক, ইনকিলাব, নয়া দিগন্ত)

ধর্ষণ করতে গিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানিম হাসান তারেক
২০১৬ সালের ১৩ নভেম্বর, চুয়াডাঙ্গায় ধর্ষণচেষ্টার সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে গণপিটুনির শিকার হয়েছে সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ শাখার সাধারণ সম্পাদক তারিক হাসান তারেক। শুক্রবার গভীর রাতে কলেজ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, মদ্যপ অবস্থায় শুক্রবার রাতে কলেজ চত্বরে বসবাসরত এক পরিচারিকার ঘরে ঢুকে অবৈধ অস্ত্র দেখিয়ে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় ছাত্রলীগ নেতা তারেক। এ সময় ওই পরিচারিকার ছেলে বিষয়টি বুঝতে পেরে তারেককে হাতেনাতে ধরে ফেলে। তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন জড়ো হয়ে তারেককে গণপিটুনি দেয় এবং তার চুল কেটে দিয়ে অন্ডকোষ ইট দিয়ে ছেঁচে দেয়। তবে ছাত্রলীগের আরও কিছু নেতা গিয়ে তারেককে উদ্ধার করে দ্রæত ওই এলাকা ত্যাগ করে। এ ঘটনায় ওই রাতেই থানায় মামলা দায়ের করেন নির্যাতিতা। মামলার বিবরণে এ তথ্যের সত্যতা মিলেছে। (বাংলা ট্রিবিউন)

২০১৭ সালের ১১ জানুয়ারি ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ১০নং হবিরবাড়ি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর কবির ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে এক স্কুলছাত্রীকে জোর করে তুলে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে। ওই ছাত্রী ময়মনসিংহের মুসলিম গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়াশোনা করে। অভিযুক্তরা ওই শিক্ষার্থীকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। পরে ওই কলেজছাত্রীর এক বান্ধবী তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। ঘটনার প্রায় চার মাস পর ধর্ষিতার পিতা বাদী হয়ে গত ১৫ মে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানায় ধর্ষণ মামলা করেন।

২০১৭ সালের ১০ মার্চ ভোলা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ মাহমুদের বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া যায়। ঘটনার পর গত ২৭ আগস্ট ভোলা সদর থানায় মামলা হয়। ওই ছাত্রী নিজেই বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করে। অভিযুক্ত রিয়াজ মাহমুদকে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে গত ৩১ আগস্ট শহরের আবদুর রব স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে মানববন্ধন করেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। ওই সময়ে নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রী ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়।

ধর্ষণের দায়ে আটক বরগুনার চার ছাত্রলীগ নেতা
২০১৭ সালের ১০ আগস্ট বরগুনা পাথরঘাটা কলেজের পাশের পুকুর থেকে অজ্ঞাত এক তরুণীর গলিত লাশ উদ্ধার হয়। পরে ওই তরুণীকে গণধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে বরগুনার পাথরঘাটা কলেজ ছাত্রলীগ নেতাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বরগুনার পুলিশ সুপার বিজয় বসাক এ কথা জানান। গ্রেপ্তাররা হলো- পাথরঘাটা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রুহি আনাল দানিয়াল (২২), সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন (২১), সাংগঠনিক সম্পাদক মাহিদুল ইসলাম রায়হান (১৯), উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক মো. মাহমুদ (১৮) ও কলেজের নৈশপ্রহরী জাহাঙ্গীর হোসেন (৪৪)।

২০১৭ সালের ১১ সেপ্টেম্বর গাজীপুর সিটি করপোরেশনের এরশাদনগর এলাকায় ওয়ার্ড পর্যায়ের ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে তৃতীয় শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে উঠে। পরে তাকে আটক করে পুলিশ। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা পারভেজ মাসুদ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৪৯নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে তার দলের স্কুল কমিটির এক নেত্রীকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে। অভিযুক্ত ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম রিয়াদ হোসেন। সে সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি।
৮ নভেম্বর বুধবার রাতে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে রাজবাড়ী জেলার রামকান্তপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুমন মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
 
পুলিশের হাতে আটক ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফ হোসেন হাওলাদার
২৮ ডিসেম্বর শরীয়তপুরে ছয় নারীকে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ ও সেসব দৃশ্য গোপনে ভিডিও করে ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় গ্রেফতার হয় শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন হাওলাদার। উপজেলা ছাত্রলীগ নেতাকর্মী, পুলিশ ও কয়েকজন নারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আরিফ হোসেন গোসলখানায় গোপন ক্যামেরা রেখে স্থানীয় এক নারীর অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে। ওই ভিডিও দেখিয়ে পরে তাকে ধর্ষণ করে। এছাড়া আরিফের কলেজপড়ুয়া চাচাত বোন এবং এক মালয়েশিয়া প্রবাসীর স্ত্রীও তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন।

২৩ জানুয়ারি ২০১৮, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইনের নেতৃত্বে সংগঠনের ২০-২৫ জনের একটি দল উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে যান। তারা উপাচার্যকে কক্ষে পাঠিয়ে আন্দোলনকারীদের করিডর থেকে সরিয়ে দেন। এরই মধ্যে ছাত্রলীগের কয়েক’শ কর্মী এসে জড়ো হন। এরপর তারা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়। এসময় ছাত্রলীগের কর্মীরা তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং গায়ের পোশাক ছিঁড়ে ফেলে।

 ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা
জয়বাংলা শ্লোগানে আকাশ বাতাস প্রকম্পিত করে এভাবে নারী নিগ্রহের ঘটনা সত্যিই দেশবাসীকে ভাবিয়ে তুলেছে। ভাবতে শেখাচ্ছে ‘জয়বাংলা’ কি ধর্ষকদের শ্লোগান? ধর্ষণ আর নারী নিগ্রহের ঘটনা কি এই শ্লোগানধারীদের ঐতিহ্য হয়ে দাঁড়াবে?

শেখ হাসিনার সোনার ছেলেদের ধর্ষণকান্ডের আরো কিছু খন্ডচিত্র দেখি 

পাঁচ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ
চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার একটি গ্রামে একজন গৃহবধূকে (৩০) রাতভর ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের পাঁচ নেতার বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে থানায় ওই পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন গৃহবধূ। ওই গৃহবধূর স্বামী সম্প্রতি একটি মামলায় গ্রেপ্তার হন। তাঁর জামিনের ব্যাপারে গত সোমবার এক আত্মীয় ৩৭ হাজার টাকা নিয়ে গৃহবধূর বাড়িতে যান। কোনোভাবে খবরটি জেনে ওই দিন রাত নয়টার দিকে ওই পাঁচজন বাড়িটিতে জোরপূর্বক প্রবেশ করে গৃহবধূর শিশুসন্তান, শাশুড়ি ও আত্মীয়কে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করেন। পরে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গৃহবধূ ও আত্মীয়কে বিবস্ত্র করে ছবি তোলেন ও মারধর করেন। মারধর শেষে রাতভর গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন তাঁরা।
২৬ মার্চ ২০১৪/ প্রথম আলো 

স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে ধর্ষণ, ছাত্রলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ২
চিকিৎসা নিতে রাজধানীতে এসে হোটেলকক্ষে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক গৃহবধূ (২৬)গত রোববার গভীর রাতে মগবাজারের এক আবাসিক হোটেলে পাশের কক্ষে স্বামীকে বেঁধে রেখে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশ ওই কক্ষ থেকে মহানগর ছাত্রলীগের এক নেতা ও তাঁর এক সহযোগীকে ছুরিসহ গ্রেপ্তার করেছে রমনা থানার পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া দুজন হলেন ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল হোসেন (২৭) ও তাঁর সহযোগী উজ্জ্বল মিয়া (৩৩)তাঁদের সোমবার আদালতে পাঠালে আদালত তাঁদের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন গতকাল মঙ্গলবার থেকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে
১১ জুন ২০১৪/ প্রথম আলো 

তরুণীকে অপহরণ করে বনে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ
টাঙ্গাইলে এক তরুণীকে রাস্তা থেকে অপহরণ করে মধুপুর বনে নিয়ে ধর্ষণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থল থেকে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে তাঁদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন ওই তরুণী। মধুপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম বলেন, গতকাল সোমবার মেয়েটি তাঁর চাচাতো ভাইয়ের সঙ্গে মধুপুর গঙ এলাকার ঘুঘুর বাজার নামক স্থানে এক আত্মীয়ের বাডড়তে যাচ্ছিলেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাঁরা টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সঙকের বঙবাইদ নামক স্থানে পৌঁছালে জলছত্র এলাকার আরিফ হোসেন (২৪) ও আমিনুল ইসলাম (২৩) তাঁদের পথরোধ করেন। তাঁরা মেয়েটির ভাইকে হুমকি দিয়ে মেয়েটিকে মধুপুর বনের ভেতর নিয়ে যান। কিছুক্ষণ পরই সঙকের ওই স্থান দিয়ে মধুপুর থানা পুলিশের একটি টহল ভ্যান যাচ্ছিল। তখন মেয়েটির ভাই পুলিশ ভ্যান থামিয়ে বোনকে ধরে নিয়ে যাওয়ার কথা জানান। পুলিশ বনে ঢুকে ওই দুই যুবককে আটক করে। মেয়েটিকে উদ্ধার করে মধুপুর থানায় আনা হয়।
১৩ অক্টোবর ২০১৫/ প্রথম আলো

ধর্ষণ মামলায় ছাত্রলীগ নেতা রিমান্ডে
সাভার থানায় হওয়া ধর্ষণ মামলার আসামি ধামরাই থানা ছাত্রলীগের সভাপতি লায়ন পারভেজকে এক দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। আজ সোমবার দুপুরে পুলিশ তাঁকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আফরোজা খাতুন এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, গত ২২ ফেব্রুয়ারি ধর্ষণের শিকার হওয়া নারী সাভারের একটি বিপণিবিতানে কেনাকাটা করতে যান। সেখান তাঁর সাবেক স্বামী ও লায়ন পারভেজ তাঁকে অপহরণ করে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান । পরে সাভারের ব্যাংক কলোনি এলাকার বাসায় নিয়ে গিয়ে পারভেজের সহায়তায় তাঁর সাবেক স্বামী তাঁকে ধর্ষণ করে হত্যার চেষ্টা করে। সাভার থানার পুলিশ জানায়, ওই নারী কৌশলে ওই বাসা থেকে পালিয়ে যান। পরে তিনি তাঁর সাবেক স্বামী ও ছাত্রলীগের নেতার বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করেন।
৪ এপ্রিল ২০১৬/ প্রথম আলো 

গাজীপুরে ধর্ষণের মামলায় ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার
গাজীপুরে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় জেলা ছাত্রলীগের এক নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন। পুলিশ গতকাল মঙ্গলবার শ্রীপুর পৌরসভার মাওনা পশ্চিমখন্ড এলাকার নিজ বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ জানায়, একরামুল প্রায় এক বছর ধরে একটি মেয়েকে নিয়ে রূপনগর থানা এলাকায় বসবাস করে আসছিলেন। একপর্যায়ে মেয়েটি বিয়ের জন্য একরামুলকে চাপ দেন। কিন্তু একরামুল তাতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর মেয়েটি ১৭ মে একরামুলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন।
২৫ মে ২০১৬/ প্রথম আলো

পানছড়িতে ধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার
ড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলায় নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১৫) বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেনকে এলাকাবাসী আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন। গত সোমবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। তোফাজ্জল উল্টাছড়ি ইউপির বাসিন্দা। এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা গতকাল মঙ্গলবার বাদী হয়ে তোফাজ্জলকে আসামি করে পানছড়ি থানায় মামলা করেন। পানছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল জব্বার বলেন, তোফাজ্জল ওই ছাত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। সোমবার রাত ১১টার দিকে তোফাজ্জল গোপনে মেয়েটির ঘরে ঢুকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন। একপর্যায়ে মেয়েটির বড় ভাই টের পেয়ে তোফাজ্জলকে আটক করেন। বিষয়টি জানার পর এলাকাবাসী গিয়ে তাঁকে আটক করে পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে তোফাজ্জলকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। ওসি জানান, আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
১৩ জুলাই ২০১৬/ প্রথম আলো 

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা, ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার
বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে পিরোজপুর শহরে আবাসিক হোটেলে নিয়ে গত মঙ্গলবার এক স্কুলছাত্রীকে (১৫) ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে বরগুনার আমতলী উপজেলা ছাত্রলীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পিরোজপুর সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাচনাইন পারভেজ বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে গতকাল বুধবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে।

থানা-পুলিশ ও পরিবার সূত্র জানায়, ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে মুঠোফোনের মাধ্যমে আমতলীর এক যুবকের (৩০) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মঙ্গলবার মেয়েটিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই যুবক ও তাঁর বন্ধু ছাত্রলীগের নেতা মোটরসাইকেলে করে পিরোজপুর শহরে নিয়ে এসে একটি আবাসিক হোটেলে ওঠেন। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মেয়েটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন তাঁরা।
১০ নভেম্বর ২০১৬/ প্রথম আলো 

ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ
ওই ছাত্রী একটি কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। পরীক্ষার কেন্দ্র পড়েছে সরকারি ভিকু মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজে। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে ব্যবহারিক পরীক্ষা শেষ হয়। এ সময় কেন্দ্রের মধ্যেই ছাত্রলীগ নেতা সুজন মিয়া ওই ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করেন। খবর পেয়ে ওই ছাত্রীর মামা ও যুবলীগের নেতা তাঁর কয়েকজন অনুসারীকে নিয়ে সেই কলেজে যান। এরপর সুজনকে মারধর করে অধ্যক্ষের কক্ষে নিয়ে যান তিনি। খবর পেয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর হোসেন খান ওরফে মহিদসহ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা কলেজে যান। এরপর তাঁরা কলেজের মূল ফটকে তালা দেন। পরে কলেজে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে।
২২ মে ২০১৭/ প্রথম আলো 

ভালুকায় ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার একটি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ১৫ মে মামলা হয়। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত আসামি গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এজাহার সূত্রে ও ওই ছাত্রীর বাবার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মেয়েটি ময়মনসিংহ শহরের একটি কলেজের উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী। ছাত্রলীগের ওই নেতা মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করতেন। গত ১১ জানুয়ারি ওই নেতা তাঁর এক বন্ধুকে নিয়ে কলেজের সামনের সড়ক থেকে মেয়েটিকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যান। পরে মাইক্রোবাসটির ভেতরে ওই নেতা মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন। এরপর মেয়েটিকে অচেতন অবস্থায় সড়কের ওপর ফেলে রেখে ওই নেতা ও তাঁর বন্ধু চলে যান। পরে মেয়েটিকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
২৪ মে ২০১৭/ প্রথম আলো 

নববধূকে ধর্ষণের মামলা: ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার
নিবার রাতে স্বামীকে আটকে রেখে নববধূকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে সুমনের বিরুদ্ধে। নববধূর স্বামী অভিযোগ করেন, সুমন তাঁর কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেওয়ায় তাঁকে এবং তাঁর ফুপুকে আটকে রেখে তাঁর স্ত্রীকে ধর্ষণ করেন সুমন। বানারীপাড়া থানার পরিদর্শক সাজ্জাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সুমনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
১৭ জুলাই ২০১৭/ প্রথম আলো 

শিশু ধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার
গাজীপুরের টঙ্গীতে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১০) ধর্ষণের অভিযোগে স্থানীয় ছাত্রলীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার পারভেজ মাসুদ (২২) গাজীপুর সিটির ৪৯ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলে জানিয়েছেন গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম। তিনি জানান, পারভেজের বিরুদ্ধে শিগগিরই দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ছাত্রীর বাবার ভাষ্য, গতকাল রোববার সন্ধ্যার দিকে পারভেজ মাসুদ মেয়েটিকে বাড়িতে ডেকে নেন। পরে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। মেয়েটি বাড়িতে গিয়ে ঘটনা তার মাকে খুলে বলে। পরে বিষয়টি টঙ্গী থানার পুলিশকে জানানো হয়। মেয়েটিকে রাতেই টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়।
১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭/ প্রথম আলো 

ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে ছাত্রলীগের এক নেতাসহ দুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষণের শিকার এক নারী এ ব্যাপারে তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন। আজ বুধবার দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ওই নারী এ অভিযোগ করেন, উপজেলার আটিয়া মাজারে মেলায় গিয়ে আটিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সেলিমের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর থেকে সেলিম ওই নারীকে বিভিন্ন সময়ে কুপ্রস্তাব দেন। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ার পর থেকে ওই নারী জেলা শহরের একটি বাসায় একাই থাকতেন। গত ৮ সেপ্টেম্বর সেলিম ও তাঁর বন্ধু শেখ শিপন ওই নারীর বাড়িতে গিয়ে তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় ওই নারী চিৎকারের চেষ্টা করলে সেলিম ও শিপন তাঁর হ্াত-মুখ বেঁধে ফেলেন। পরে সেলিম ওই নারীকে ধর্ষণ করেন এবং তাঁর কথামতো শিপন মুঠোফোনে ধর্ষণের দৃশ্য ভিডিও করেন। 
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭/ প্রথম আলো 

ছয় নারীকে ধর্ষণের ভিডিও ছড়ালেন ছাত্রলীগ নেতা!
নাম তাঁর আরিফ হোসেন হাওলাদার (২২)। তিনি শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, গোসলখানায় গোপন ক্যামেরা লাগিয়ে গৃহবধূর ভিডিও ধারণ করেন প্রথমে। পরে সেই ভিডিও দেখিয়ে তাঁকে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করেন। সেটাও গোপনে ভিডিও করেন। সেই ভিডিও এখন এলাকার মানুষের হাতে হাতে। এভাবে ফাঁদে ফেলে ছয়জন নারীকে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে তা ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে আরিফ হোসেনের বিরুদ্ধে। গত ১৫ অক্টোবর থেকে ধর্ষণের ভিডিওগুলো গ্রামের মানুষের মোবাইল ফোনে ছড়িয়ে পড়ে।
১০ নভেম্বর ২০১৭/ প্রথম আলো 

তরুণীকে ধর্ষণ-হত্যায় চার ছাত্রলীগ নেতাকে বহিষ্কার
বরগুনার পাথরঘাটা কলেজে অজ্ঞাত এক তরুণীকে ধর্ষণ শেষে হত্যার ঘটনায় করা মামলার আসামি ছাত্রলীগের চার নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে ছাত্রলীগের জরুরি সভায় তাঁদের বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কৃত ওই চারজন হলেন, কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রুহিআনান দানিয়াল (২২), সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন (২১), ২ নম্বর সাংগঠনিক সম্পাদক মাহিদুল ইসলাম রায়হান (১৯) ও উপজেলা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক মোহাম্মদ মাহমুদ (১৮)। গত ১০ আগস্ট পাথরঘাটা কলেজের পেছনে খাসপুকুর থেকে হাত-পা বাঁধা অজ্ঞাত পরিচয় এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করা হয়। তরুণীকে ধর্ষণ শেষে হত্যা করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। এ ঘটনায় পাথরঘাটা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রুহিআনান দানিয়ালসহ ছাত্রলীগের চার নেতাকে পুলিশ গত শনি ও রোববার আটক করে। এর আগে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ওই কলেজের নৈশ প্রহরী জাহাঙ্গীর হোসেনকে আটক করে পুলিশ। তাঁর দেওয়া জবানবন্দির জের ধরে এই চার নেতাকে আটক করা হয়।
১৩ নভেম্বর ২০১৭/ প্রথম আলো

নেত্রীকে ধর্ষণ মামলায় ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার
সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত এক নেতাকে ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি জেলার বেলকুচি উপজেলার দলীয় এক নেত্রীকে ধর্ষণ করেছিলেন। অভিযুক্ত রিয়াদ হোসেন সিরাজগঞ্জ ছাত্রলীগের সহসভাপতি ছিলেন। ধর্ষণ মামলা হওয়ার পর তাঁকে বহিষ্কার করে ছাত্রলীগ। সোমবার পিবিআইয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রিয়াদকে গতকাল রোববার গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
১২ মার্চ ২০১৮

ছাত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছিলেন ছাত্রলীগ কর্মী 
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়টির এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার বিকেলে শহীদুল্লাহ্ কলা ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে বলে ওই ছাত্রী অভিযোগ করেন।

ছাত্রলীগের মতিহার হল শাখার সদস্য ও ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মো. মানিক আহমেদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। কয়েকবার চেষ্টা করেও অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগ কর্মী মো. মানিক আহমেদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ / প্রথম আলো 

বিধবাকে ধর্ষণের পর খুন : ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার
টাঙ্গাইলের সখীপুরে বিধবা নাজমা আক্তারকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে খুন করার ঘটনার প্রধান আসামি ছাত্রলীগ নেতা আবু শিহাবকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সহযোগিতায় টাঙ্গাইল শহর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল শুক্রবার সকালে আবু শিহাবকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া আবু শিহাব সখীপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক। আবু শিহাব উপজেলার মুচারিয়া পাথার গ্রামের বাসিন্দা। এদিকে নাজমা খুনের আরেক আসামি হাবিবুর রহমানকে গতকাল বিকেলে তিন দিনের রিমান্ডে এনেছে পুলিশ।

২১ এপ্রিল ওই মামলার আসামি আলমগীর হোসেন টাঙ্গাইল আদালতে ছাত্রলীগ নেতা আবু শিহাবের নেতৃত্বে সাত তরুণ মিলে নাজমা আক্তারকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে হত্যা করেন বলে বিচারিক হাকিমের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। নাজমার স্বামী নছর আলী ১০ বছর আগে মারা যান। গত বছরের ৫ অক্টোবর সখীপুর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রতিমা বংকী গ্রামের নিজ বাসা থেকে পুলিশ নাজমা আক্তারের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে।
২৭ এপ্রিল ২০১৯/ প্রথম আলো 

ছাত্রলীগ নেতার শাস্তির দাবিতে চিকিৎসকদের বিক্ষোভ
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে এক সহকর্মীর পেটে ব্যথার চিকিৎসা নিতে সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান সিলেটের দক্ষিণ সুরমা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সরোয়ার হোসেন চৌধুরী। এ সময় তাঁদের সঙ্গে আরও ১০-১২ জন যুবক ছিলেন। এ সময় হাসপাতালের এক শিক্ষানবিশ চিকিৎসক অভিজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে অপেক্ষা করতে বলেন। এ নিয়ে চিকিৎসক ও সরোয়ারের সঙ্গে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে তিনি শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে ধর্ষণ ও প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন বলে অভিযোগ ওঠে। হাসপাতালের একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সিলেট কোতোয়ালি থানায় ছাত্রলীগ নেতা সরোয়ারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে হাসপাতালের পরিচালকসহ একাধিক চিকিৎসক থানায় গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। থানায় বিষয়টি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হিসেবে গ্রহণ করেছে।
১১ মে ২০১৯/ প্রথম আলো 

কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় ছাত্রলীগ নেতা কারাগারে
চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে এক কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলা ছাত্রলীগের এক নেতাকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী। ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার হওয়া ছাত্রলীগ নেতা হলেন মো. সোহেল হোসেন (৩১)। তিনি শাহরাস্তি উপজেলা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক। সোহেল সেনগাঁও গ্রামে একটি মাছের খামার করেছেন। সেখানে নেতা-কর্মীদের নিয়ে সময় কাটান।
৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯/ প্রথম আলো

মনপুরায় স্পিডবোটের নারীযাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ
ভোলার মনপুরা উপজেলায় স্পিডবোটের চার যাত্রী এক নারী যাত্রীকে ধর্ষণ করছেন বলে মালিককে খবর দেন স্পিডবোটের চালক। খবর পেয়ে মালিক এসে ওই চারজনকে মারধর করে ও টাকা ছিনিয়ে নিয়ে নিজেও ধর্ষণ করেন ওই নারীকে। গতকাল শনিবার বেলা একটার দিকে উপজেলার চর পিয়ালে এক বাগানের মধ্যে গণধর্ষণের এ অভিযোগ উঠেছে। পাঁচজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও একজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের সহায়তা করার অভিযোগে গতকাল রাতে মনপুরা থানায় মামলা করেছেন ওই গৃহবধূ।

ধর্ষণের অভিযোগে যাঁদের আসামি করে মামলা করা হয়েছে তাঁরা হলেন মনপুরা উপজেলার সাকুচিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং স্পিডবোটের মালিক নজরুল ইসলাম (৩০), মো. বেলাল পাটোয়ারী (৩৫), মো. রাশেদ পালোয়ান (২৫), মো. শাহীন খান (২২) ও মো.কিরন (২৬)। ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগে মামলার আসামি হলেন স্পিডবোটের চালক মো. রিয়াজ। 
২২ অক্টোবর ২০১৯/ প্রথম আলো

কুমিল­ায় শিশু ধর্ষণের অভিযোগে জুতা পেটা খাওয়া ছাত্রলীগ নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার
কুমিল­ার লালমাই উপজেলায় ৯ বছরের শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে জেলা ছাত্রলীগ নেতা জয়নাল আবেদিন জয়কে গ্রাম্য সালিশি বৈঠকে জুতাপেটা করা হয়েছে। জুতাপেটার ৪১ সেকেন্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের সংগঠন থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

জয়নাল আবেদিন জয় কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। তিনি কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বাগমারা দক্ষিণ ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে। এছাড়াও জয় নিজেকে কুমিল­ার স্থানীয় একটি দৈনিক পত্রিকার উপজেলার সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন।
২৫ আগস্ট ২০২০/ আজকের কুমিল্লা

রংপুর ছাত্রলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে শিক্ষিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ
রংপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান সিদ্দিকী রনির বিরুদ্ধে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষিকা নিজে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় ধর্ষণের অভিযোগ করেন। বিষয়টি রংপুর জেলাজুড়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। 
৭ সেপ্টেম্বর ২০২০/ মানবজমিন

ধর্ষণ মামলায় ঢাকা উত্তরের ছাত্রলীগ নেতা রিমান্ডে
কাজের মেয়েকে ধর্ষণের মামলায় ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সবুজ আল সাহাবাসহ (২৮) ২ জনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহ¯পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মণ্ডল এ আদেশ দেন। এদিন আসামিদের আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের ৭ দিন রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার এসআই রোকসানা আক্তার রুনা। শুনানি শেষে আদালত আসামি সবুজের ৫ দিন ও সবুজের সহযোগী বিবি ফাতেমা ওরফে ঝুমুরের ৩ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। এদিকে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে সবুজ আল সাহাবাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
২ অক্টোবর ২০২০/ যুগান্তর

বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ, ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা
বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগ নেতা ফেরদৌস মোহাম্মদ শ্রাবণের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী। শনিবার (১৪ নভেম্বর) রাতে নগরীর মতিহার থানায় এ মামলা রেকর্ড করা হয়। ফেরদৌস মোহাম্মদ শ্রাবণ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এবং রাবি ছাত্রলীগের মানবস¤পদ উন্নয়ন বিষয়ক স¤পাদক। তার বাড়ি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা এলাকায়।
১৫ নভেম্বর ২০২০/ পুর্বপশ্চিমবিডি

ভাবিকে ধর্ষণচেষ্টায় রায়পুরা পৌর ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার
ভাবিকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে নরসিংদীর রায়পুরা পৌর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক স¤পাদক দিপু মিয়াকে (২৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহ¯পতিবার ভুক্তভোগী গৃহবধূ বাদী হয়ে দিপু মিয়াকে আসামি করে রায়পুরা থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে রাতে রায়পুরা পৌর এলাকার রামনগরহাটি গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ শুক্রবার বিকালে নরসিংদী জুটিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রিট অনামিকা চৌধুরীর আদালতে হাজির করলে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
২৭ নভেম্বর ২০২০/ কালেরকণ্ঠ

হাটহাজারী ছাত্রলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা
এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে হাটহাজারীতে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুর রহমান রাসেলের (৩২) বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ মামলা দায়ের হয়েছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ৯ (১) ধারায় বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ ও অবৈধ গর্ভপাতের অভিযোগ এনেছেন বাদী। গত বুধবার মামলাটি করেন একই উপজেলার পূর্ব মেখল গ্রামের বাসিন্দা ওই নারী। পরে আদালত অভিযোগটি সরাসরি এফআইআর হিসেবে নেয়ার জন্য হাটহাজারী থানাকে নির্দেশ দেন। অভিযুক্ত আরিফুর রহমান রাসেল হাটহাজারী পৌরসভার মোহাম্মদ মিয়াজির বাড়ীর শামসুল আলমের ছেলে।
২৯ জানুয়ারি ২০২০/ মানবজমিন

ধর্ষণচেষ্টার মামলা করায় নারীকে পেটালেন ছাত্রলীগ নেতা
কুমিল­ায় ধর্ষণচেষ্টা ও নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করায় এক প্রবাসীর স্ত্রীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতা মো. রনির বিরুদ্ধে। তিনি কুমিল­া দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি। ওই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টা, নির্যাতন ও চাঁদা দাবির অভিযোগে গত ৩১ জানুয়ারি কুমিল­ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলাটি করেন ভুক্তভোগী নারী। এ ঘটনায় আগামী ২৭ ফেব্র“য়ারি বাদী ও অভিযুক্তদের ওই সেলে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ দেয় পুলিশ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মঙ্গলবার (২৩ ফেব্র“য়ারি) রাতে রনি ওই নারীকে মারধর করেন। তিনি বর্তমানে কুমিল­া জেনারেল (সদর) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
২৫ ফেব্র“য়ারি ২০২১/ সময় নিউজ টিভি

রামগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন কলেজছাত্রী
ল²ীপুরের রামগঞ্জে দ্বাদশ শ্রেণির কলেজছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-স¤পাদক মহসিনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় স্থানীয় মাতব্বরদের চাপে ওই কলেজছাত্রী পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। উপজেলার ভাটরা ইউনিয়নের দল্টা গ্রামের তিনই ভ‚ঁইয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। গতকাল সকালে সরজমিন ঘটনাস্থলে গেলে উপজেলার ভাটরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন মিঠু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
২৬ ফেব্র“য়ারি ২০২১/ মানবজমিন

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার
গুড়ার ধুনট উপজেলায় প্রেমের ফাঁদে ফেলে এক স্কুলছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের পর ওই ছাত্রলীগ নেতা আকাশ খান ফারুককে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আকাশ উপজেলার মোহনপুর দক্ষিন পাড়ার আমির হোসেন মাষ্টারের ছেলে। সে বগুড়া আজিজুল হক বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের øাতক বিজ্ঞান শাখার দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সদস্য।
১ মার্চ ২০২১/ আমার সংবাদ

বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ
বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি জসীম উদ্দিনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন এক তরুণী। সোমবার রাতে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এয়ারপোর্ট থানায় অভিযোগ দায়ের এবং মামলা রুজুর আবেদন করেন ওই তরুণী। মামলার অভিযোগে ২৫ বছর বয়সী ওই তরুণী উলে­খ করেন, বিয়ের আশ্বাস দেখিয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি জসীম জোর করে নগরীর ২৯নং ওয়ার্ডস্থ তরুণীর বাসায় ঢুকে জোর করে ধর্ষণ করে ২০১৯ সালের ১০ সেপ্টেম্বর। এতে তিনি গর্ভবতী হয়ে পড়লে জসীম তাকে গর্ভপাতের ওষুধ খাওয়াতে থাকে। একপর্যায়ে বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গর্ভপাত করায়।
২০ এপ্রিল ২০২১/ যুগান্তর

মেয়েকে ধর্ষণের বিচার চাওয়ায় বাবাকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার মারধর
মাদারীপুরের শিবচরে ৯ম শ্রেণির এক মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এই ঘটনার বিচার চাওয়ায় অভিযুক্তর হাতে উল্টো মারধরের শিকার হয়েছেন নির্যাতিতার পিতা। অভিযুক্তকে আটক করেছে পুলিশ।
২৯ মে ২০২১/ ডিবিসি টিভি

স্বামীকে বেধে রেখে নববধূকে ধর্ষণ, রিমান্ডে ছাত্রলীগ নেতা
হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার টিক্কাপুর হাওরে স্বামীকে বেঁধে নববধূকে গণধর্ষণের মামলায় ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা সোলায়মান হোসেন রনিসহ (২২) দুইজনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।সোমবার হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আসমা বেগম এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে নেওয়া অন্যজন হলেন শুভ মিয়া। এ মামলায় আরও ৩ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। এ নিয়ে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
৭ সেপ্টেম্বর ২০২১/ যুগান্তর   


ছাত্রলীগের খুনের রাজনীতি



ছাত্রলীগ যেন একটি সব্যসাচী দল। যাদের কাছে খুন, রগ কাটা, নির্যাতন একটি সহজ ও রুটিন কাজে পরিণত হয়েছে। জাতীয় পত্রিকা ও গণমাধ্যমগুলোর রিপোর্টে এমন চিত্রই ফুটে উঠেছে। দৈনিক প্রথম আলো, যুগান্তর ও সাপ্তাহিক সোনার বাংলার রিপোর্ট ও কেস স্টাডিতে দেখা যায় গত ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ একাই খুন করেছে অন্তত ২৫৩ জনকে। এর মধ্যে একটা বড় অংশ নিজ দলের নেতাকর্মী। বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী ঘৃণিত জঙ্গি সংগঠনসমূহের টোটাল স্টুডেন্টস হত্যা, এমনকি জঙ্গিদের হাতে সাধারণ মানুষ হত্যার হার, সংঘর্ষের হার ও হতাহতের হারকে ছাত্রলীগ ছাড়িয়ে গেছে মাত্র ১৩ বছরে।

প্রতি বছরেই তারা খুন করেছে প্রায় ১৮ জনকে। প্রকাশ্যে বিশ্বজিৎ হত্যাকান্ড, ঢাবির মেধাবী ছাত্র আবু বকর হত্যাকান্ডে দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। তাছাড়া ২০১০ সালে বরিশাল পলিটেকনিকে দু’পক্ষের সংঘর্ষের সময় নজরুল ইসলামকে ধরে রেখে চুরি দিয়ে মুহুর্মুহু কোপানির দৃশ্য মানুষের মনে বীভৎসতার নতুন চিত্র তুলে ধরে। তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি শিশু ও সাংবাদিকও। ছাত্রলীগ নেতা তপুর নির্দেশে এসপি ফজলুল করিমকে হত্যা করা হয়।

ছাত্র সংগঠনটি শিক্ষা ও প্রগতির পথ ছেড়ে রুপান্তরিত হয় কিলিং মিশিনে। দৈনিক প্রথম আলোর রিপোর্টে দেখা যায়, ২০০৯-২০১৪ সালের ২১ নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ বছরে সংঘর্ষ হয় অন্তত ৪৩২ টি, আহত হয় ১ হাজার ৫শতাদিকেরও বেশি। প্রথম পাঁচ বছরে খুন হয়েছে ৫৫ জন, কিন্তু পরবর্তী ৫ বছরে খুন হয় ১২৯ জন; যা প্রথম ৫ বছেরর খুনের সংখ্যার দ্বিগুণেরও বেশি। দ্যা ডেইলি স্টার বাংলার রিপোর্টে দেখা যায় প্রথম আট বছরে ছাত্রলীগ হত্যা করে ১২৫ জনেরও বেশি। শুধু ২০১৮ সালেই ছাত্রলীগ হত্যা করে ৩১ জনকে(নভেম্বর পর্যন্ত)। প্রথম পাঁচ বছরের আহত(১,৫০০’র অধিক) ও সংঘর্ষের সংখ্যা দেখে বুঝা যায় শেষ পাঁচ বছরে আহত ও সংঘর্ষের সংখ্যা কেমন হতে পারে; যেখানে খুন হয়েছে দ্বিগুণের বেশি।

কেন খুনোখুনি করে ছাত্রলীগ?
পত্রিকাসমূহের রিপোর্ট ও কেস স্টাডিতে উঠে আসে এসব হত্যার পিছনে রয়েছে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তার, দলীয় কোন্দল, মাদকাসক্তি, অস্ত্রবাজি, পদের লোভ ও নারীঘটিত সমস্যা। হত্যাকান্ডের বিচারে না হওয়া আর হলেও প্রকৃত অপরাধীদের যথোপযুক্ত শাস্তি না হওয়ায় তাদের খুনের পরিমাণ দিনদিন বেড়েই চলেছে। প্রথম আলোর তথ্যমতে, শুধু ২০১৮ সালের ২৬শে নভেম্বর পর্যন্ত ১১ মাসেই তারা হত্যা করেছে ৩১ জনকে। সাধারণ মানুষের মনে এখন প্রশ্ন জেগেছে আর কত খুন হলে, আর কত স্বজন হারালে ছাত্রলীগকে জঙ্গি সংগঠন হিসেবে চিহ্নত করে নিষিদ্ধ করা হবে। প্রথম আলোর কেস স্টাডিতে উঠে আসে ছাত্রলীগের হত্যাকাণ্ড ও অন্তকোন্দলের ঘটনায় একশরও বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছে বারে বারে; শিক্ষার সুস্থ পরিবেশ ব্যহত হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহে।

কিছু আলোচিত হত্যাকাণ্ড
২০০৯ সালের ১৩ মার্চ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক শরিফুজ্জামান নোমানীকে হত্যার মধ্যে দিয়ে ছাত্রলীগ খুনের যাত্রা শুরু করে, ৮ ফেব্রুয়ারি চবিতে দুই শিবিরকর্মী মুজাহিদ ও মাসুদকে, ৩১ মার্চ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ ওরফে রাজীবকে খুন করে ছাত্রলীগ। এছাড়া ২০১০ সালের ৭ জানুয়ারি রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ছাত্রমৈত্রীর সহ-সভাপতি রেজানুল ইসলাম চৌধুরী, ৮ জানুয়ারি জাবির ছাত্রলীগ কর্মী জুবায়ের আহমেদকে, ২১ জানুয়ারি পাবনা টেক্সটাইল কলেজের ছাত্রলীগ কর্মী মোস্তফা কামাল শান্ত, ৮ ফেব্র“য়ারি (ছাত্রলীগের দাবি) ফারুক হোসেন, ১১ ফেব্রুয়ারি রাবির মহিউদ্দিন, ২৮ মার্চ হারুন অর রশিদ কায়সার, ১৫ এপ্রিল আসাদুজ্জামান, ১৫ আগস্ট নাসিম এবং ১৬ জুলাই অভ্যন্তরীণ কোন্দলে খুন হন ছাত্রলীগ কর্মী সোহেল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ ফেব্রুয়ারি ছাত্রলীগ-পুলিশের সংঘর্ষে নির্মমভাবে খুন হন নিরীহ ও মেধাবী ছাত্র আবু বকর। ১২ জুলাই সিলেট এমসি কলেজে ছাত্রলীগ কর্মী পলাশকে খুন করে।

২০১৪ সালের ৪ এপ্রিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রুস্তম আলী আকন্দ নিজ কক্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এই ছাত্র পরবর্তী সম্মেলনে সংগঠনের ওই হল শাখার সভাপতি পদপ্রার্থী ছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, পদ নিয়ে সংগঠনের নেতা-কর্মীদের অন্তঃকোন্দলেই প্রাণ হারান তিনি। এ হত্যাকাণ্ডের বহু বছর পেরিয়ে গেলেও হত্যায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে পারেনি পুলিশ।

২০১০ সালের ১৫ আগস্ট ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ মখদুম হলের তিনতলার ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হলে ছাত্রলীগ নেতা নাসিরুল্লাহ নাসিম মারা যান।

২০১৪ সালের ১৪ জুলাই অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে কুপিয়ে হত্যা করা হয় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাঈমুল ইসলামকে। ঘটনায় জড়িত থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই হত্যার বিচার তো দূরের কথা অভিযোগ পত্রই তৈরি করতে পারেনি পুলিশ।

২০১৪ বছরের ৩১ আগস্ট ঢাকায় সমাবেশ শেষ করে ফেরার পথে ট্রেন থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করা হয় চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা তৌকির ইসলামকে। আসনে বসা নিয়ে বিবাদের সূত্র ধরে সাতকানিয়া ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী তাঁকে ট্রেন থেকে ছুড়ে ফেলে দেন। তাঁকে টঙ্গীর নিমতলী থেকে উদ্ধারের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজে নেওয়ার পর মারা যান তৌকির। এ ঘটনায় কোনো মামলা পর্যন্ত হয়নি।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নিজেদের সংঘর্ষে প্রথম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে ওই বছরের ৩০ মার্চ। ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিহত হন কলেজ ছাত্রলীগের একাংশের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আসাদ। অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যায় কলেজ। কিন্তু ওই ঘটনারও কোনো সুরাহা হয়নি।

এ ছাড়া ২০১০ সালের ১২ জুলাই সিলেট এম সি কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী উদয়েন্দু সিংহকে কুপিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের একটি অংশ। একই বছরের ১৯ জুলাই রাজধানীর গোড়ানে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে খুন হন ছাত্রলীগের নেতা আলী রেজা। ২০১১ সালের ৯ জানুয়ারি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের কর্মী জুবায়ের আহমেদ একই সংগঠনের কর্মীদের হামলায় নিহত হন। ২০১২ সালের ১৬ জুলাই অভ্যন্তরীণ কোন্দলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ছাত্রলীগের নেতা আবদুলাহ আল হাসান সোহেল মারা যান।

ছাত্রলীগের হত্যাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত হত্যাকাণ্ড ছিল প্রকাশ্যে মিডিয়ার সামনে কুপিয়ে বিশ্বজিৎ হত্যা। রাজনীতি যে এত নিষ্ঠুর, মানুষ যে এত নৃশংস এবং একটি ছাত্রসংগঠন যে এমন দানব হতে পারে, তা ভাবলেও গা শিউরে ওঠে। বিশ্বজিৎ দাস নামের যে যুবকটি রোববার ভোরে বাসা থেকে নিজের কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন, তিনি কি ঘুণাক্ষরেও চিন্তা করছিলেন, মৃত্যুদূত তাঁর সামনে অপেক্ষা করে আছে। আর সেই মৃত্যুদূতের নাম ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগ নামধারী কতিপয় দুর্বৃত্ত তাঁকে পিটিয়ে, কুপিয়ে পুরো শরীর রক্তাক্ত করে হত্যা করেছে। রক্তে পুরো শরীর, জামাকাপড় ভেসে যাচ্ছে, তিনি করজোড়ে ক্ষমা চাইছেন, বারবার বলছেন, ‘আমি রাজনীতি করি না, আমি ছাত্রদল বা শিবির করি না, আমি হিন্দু। আমি দরজিখানায় কাজ করি।’ কিন্তু ছাত্রলীগের বীর পুঙ্গবেরা তাঁকে ক্ষমা করেনি। সর্বশক্তি নিয়ে তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। যখন যুবকটি তাদের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে কাছের হাসপাতালে যেতে চাইলেন তাতেও তারা বাদ সাধল। ওরা তাঁকে চিকিৎসাও নিতে দেবে না।

এই হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে দেশের মানুষ ভেবেছিলো এই হত্যার হয়তো সঠিক বিচার হবে। ছাত্রলীগের হত্যাকাণ্ডের মধ্যে শুধু এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছিলো। কিন্তু হাসিনা সরকার বিচারালয়কে ব্যবহার করে সমস্ত ছাত্রলীগের খুনীদের সাজা মওকুফ করে নিয়েছে। যাদের সাজা হয়েছে তারা সবাই পলাতক। নামে পলাতক হলেও তারা আসলে পলাতক নয়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে পুলিশ তাদের এরেস্ট করছে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু বকর হত্যার ঘটনা ঘটে ২০১০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। সেদিন এফ রহমান হলে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মেধাবী ছাত্র আবু বকর নিহত হন। বহু বছর পেরিয়ে গেলেও ওই ঘটনার বিচার হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দিলেও বিচার পায়নি আবু বকরের পরিবার।

বকরের বাবা রুস্তম আলী (৭০) আক্ষেপ করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘যারা মারামারি করল, তারা ক্লাস করে, রাজনীতি করে। কিন্তু আমার সোনার ছেলে মইর‌্যা গেল, কোনো বিচার নাই। আমি একটা দিনমজুর। আমার জজ-ব্যারিস্টার, এমপি-মিনিস্টার নাই। আমি ক্যামনে তাদের সাথে পারমু?’

২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় একটি ভবনের দ্বিতীয় তলার ভাড়া বাসা থেকে দিয়াজের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সেদিন বাসায় দিয়াজ ছাড়া পরিবারের আর কেউ ছিল না।

ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দিয়াজ গ্রুপের প্রধান দিয়াজ ইরফান চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৫ কোটি টাকার টেন্ডারের বলি হয়েছেন!

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরী আত্মহত্যা করেননি, তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে—দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল রোববার বিকেলে প্রথম আলোকে এ কথা বলেছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) চট্টগ্রাম অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. হুমায়ুন কবির।

ছাত্রলীগের খুনের কিছু খন্ডচিত্র 

সিলেটে অভ্যন্তরীণ বিরোধে ফের ছাত্রলীগ কর্মী খুন
সিলেটে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ বিরোধে খুন হয়েছেন সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্র  ও ছাত্রলীগ কর্মী কাজী হাবীব। মঙ্গলবার রাত ১১টায় নগরীর নয়াসড়ক মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। কোতোয়ালী থানার ওসি সোহেল আহমদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত হাবীব সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিবিএ চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। তার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় বলে জানা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় নগরীর শামীমাবাদে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মাঠে হোসাইন আহমদ সাগর ও সোহেলের নেতৃত্বে একদল ছাত্রলীগ কর্মী হাবীবের উপর হামলা চালায়। এ সময় তাকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে তারা। পরে আশপাশের শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। তার অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
২০ জানুয়ারি ২০১৬/ বাংলা ট্রিবিউন

পলাশ থেকে মিয়াদ ছাত্রলীগের হাতে ১০ খুন! কমিটি বিলুপ্ত: তদন্ত কমিটি গঠন
২০১০ সালের ১২ জুলাই সিলেট নগরীর টিলাগড়ে অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে নিজ সংগঠনের ক্যাডারদের ছুরিকাঘাতে খুন হন উদেয়েন্দু সিংহ পলাশ। এমসি কলেজের গণিত বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র ও ছাত্রলীগ কর্মী ছিলেন উদয়েন্দু সিংহ পলাশ। ২০০৮ সালে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর এটাই ছিল ছাত্রলীগের হাতে প্রথম প্রাণহানীর ঘটনা। উদয়েন্দু সিংহ পলাশ হত্যাকান্ডের ঘটনায় ছাত্রলীগের ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা বীরেশ্বর সিংহ। পরবর্তীতে মূল অভিযুক্তদের বাদ দিয়ে ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। এই মামলার বিচার আজও শেষ হয়নি। এরপর গত ৭ বছরে ছাত্রলীগের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৯ জন। এর মধ্যে একজন ব্যবসায়ী ছাড়া বাকি সবাই নিজ সংগঠনের নেতাকর্মী। ৭ বছরে ১০টি খুনের ঘটনা ঘটলেও এখন পর্যন্ত কোন হত্যা মামলার বিচার সম্পন্ন হয়নি। ফলে এসব হত্যাকান্ডের বিচার নিয়ে নিহতের পরিবার ও সহকর্মীদের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
১৯ অক্টোবর ২০১৭/ সিলেটের দিনকাল 

কলেজছাত্র খুন: ছাত্রলীগ নেতার বাসা থেকে রক্তমাখা অস্ত্র উদ্ধার
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী নাঈম ইসলাম হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে পুলিশ প্রথম থেকেই ছাত্রলীগ নেতা অনন্ত শ্রাবন বিষুকে সন্দেহ করে আসছিল। এই বিষুর ভাড়া করা বাসা থেকেই গতকাল রোববার (১৮ নভেম্বর) রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে রক্তমাখা অস্ত্রসহ অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার করেছে।
১৯ নভেম্বর ২০১৮/ সিলেট ভয়েস

নারীঘটিত বিরোধে খুন ছাত্রলীগ নেতা রাকিব
নারীঘটিত বিরোধে ছাত্রলীগ নেতা রাকিব হোসেন হামজাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।এ ঘটনায় সজীব ও জসিম নামে দু'জন এবং অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করে বনানী থানায় মামলা করেছেন নিহতের বাবা আলতাফ হোসেন। তবে জড়িত কেউ এখনও গ্রেফতার হয়নি। এজাহারে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১২টার দিকে রাজধানীর মহাখালীর কড়াইলের টিঅ্যান্ডটি কলোনিতে রাকিব ও তার বন্ধু নূর ইসলামকে উপর্যুপরি কোপায় সজীব ও জসিম এবং অজ্ঞাত পাঁচ-ছয়জন। গুরুতর অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক রাকিবকে মৃত ঘোষণা করেন। নূর ইসলাম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
৭ ডিসেম্বর ২০১৮/ সমকাল 

মেয়েকে উত্ত্যক্তের ঘটনায় বাবা খুন, ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার
সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই ব্যক্তি মারা যান। দুপুরে উপজেলার পাটগ্রাম এলাকায় হামলার শিকার হন তিনি। পুলিশ অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে। নিহত ব্যক্তির নাম আবদুর রউফ (৪৫)। গ্রেপ্তার হয়েছেন আমিনুল ইসলাম (২৮)। তিনি কাজিপুর পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।
২ অক্টোবর ২০১৯/ প্রথম আলো 

স্কুল ছাত্রকে গুলি করে হত্যা করলো ছাত্রলীগ সভাপতি
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটিতে সভাপতির পদ পেয়েই বেপরোয়া থেকে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম মিসবাহ। গত ২৭ মে ২০২০ বুধবার পাঠাগারে জুয়া খেলার প্রতিবাদ করায় আইয়ুব আলী নামের ১৫ বছরের এক স্কুল ছাত্রকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠে। নিহত পরিবারের অভিযোগ কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন  ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম মিসবাহ পিস্তল দিয়ে আইয়ুবের মাথায় গুলি করলে সে ঘটনাস্থলেই নিহত হন। 
৩০ মে ২০২০/ দৈনিক আধুনিক বাংলা 

ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে খুন, নির্যাতন, নৃশংসতার পাঁচ চাঞ্চল্যকর অভিযোগ
আওয়ামীলীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা ও কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। তাদের কর্মীদের হাতে নৃশংসভাবে খুন ও নির্যাতনের অনেক ঘটনা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বার বার সংবাদ শিরোণাম হয়েছে। যারা এরকম ঘটনার শিকার হয়েছেন তাদের মধ্যে সাধারণ শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ যেমন আছেন, তেমনি নিজের দলের অনেক নেতা-কর্মীও রয়েছেন। গণমাধ্যমে সমালোচনা-বিতর্কের ঝঙ উঠলেও এসব ঘটনায় দায়ীদের খুব কম ক্ষেত্রেই বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে।
৮ অক্টোবর ২০১৯/ বিবিসি বাংলা

১০ বছরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের যত খুন!
গত ১০ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), বুয়েট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ (চবি) দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে লাশ হয়েছেন ২৪ জন শিক্ষার্থী।এই ২৪ জনের মধ্যে রয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮ জন, রাজশাহীতে ৫ জন, ময়মনসিংহ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ জন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ জন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ জন, দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩ জন। এছাড়াও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও ৩ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এসব হত্যাকান্ডের ১৭টি ঘটেছে ছাত্রলীগের আভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে! বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, লেজুড়ভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি, বিচারহীনতার সংস্কৃতি, ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের আধিপত্য বিস্তার, অভ্যন্তরীণ কোন্দল, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজির কারণেমূলত এসব হত্যাকান্ড ঘটেছে।
৮ অক্টোবর ২০১৯/ যুগান্তর

বুয়েট ছাত্র আবরার খুন, ১১ নেতা ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার
বাংলাদেশ প্রকৌশল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় ছত্রলীগ থেকে ১১ নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে গঠিত তদন্ত কমিটির তথ্যের ভিত্তিতে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় সংগঠনটির ১১ জন নেতা-কর্মীকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। সোমবার রাতে ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক অনাকাঙ্খিত ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে তাদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃতরা হলেন- বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহতাসিম ফুয়াদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদেী হাসান রবিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, উপ সমাজসেবা সম্পাদক মোশাররফ সকাল, উপ দপ্তর সম্পাদক  মুজতবা রাফিদ, সদস্য মুনতাসির আল জেমি, সদস্য এহতেমামুল রাব্বি তানিম ও মুজাহিদুর রহমান।
৮ অক্টোবর ২০১৯/ ক্যাম্পাস লাইভ

বিগত ১০ বছরে ছাত্রলীগের হাতে খুন ৩৩ মেধাবী ছাত্র
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকার গঠিত হওয়ার পর থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত গত ১০ বছরে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খুন হয়েছেন ৩৩ জন মেধাবী ছাত্র। ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের আধিপত্য বিস্তার, সিট দখল, হল দখল নিয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দল, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি মূলত এসব হত্যাকান্ডের প্রধান কারণ।
১৪ অক্টোবর ২০১৯/ সংগ্রাম 

‘ছাত্রলীগ মানেই খুন-র‌্যাগিং’
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ছাত্ররাজনীতি থাকলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার হত্যাকান্ড হতো না। রাত আটটার সময় আবরারকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন যদি ক্যাম্পাসে ছাত্রদল, বামপন্থী ছাত্র সংগঠন এবং অন্যান্য ছাত্র সংগঠন থাকতো তাহলে আবরারকে ধরে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ-মিছিল বের হতো, সাংবাদিকদের ফোন দেওয়া হতো, পুলিশ আসতো। আবরার হত্যা হয়তো ঠেকানো যেত। তিনি আরও বলেন, আবরার হত্যাকান্ড এখন সমগ্র জাতির ওপর চাপিয়ে দেয়ার ষঙযন্ত্র চলছে। এই হত্যাকান্ড ছাত্রলীগ ঘটিয়েছে। এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে আর কোনো রাজনৈতিক ছাত্র ও সামাজিক সংগঠন জডড়ত ছিল না। তাই ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার কথা ছিল। কিন্তু ষঙযন্ত্র করে সমগ্র ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার চেষ্টা চলছে।
১৭ অক্টোবর ২০১৯/ আমার সংবাদ 

যশোরে ছাত্রলীগ নেতাদের কোন্দলে যুবক খুন
যশোরে ছাত্রলীগের দুই নেতার মাটি কেনাবেচার ব্যবসার বিরোধের কোন্দলে এক যুবক খুন হয়েছে। তবে এতে জড়িত থাকা সন্দেহে কয়েকজনকে আটক করলেও পরিচয় জানায়নি পুলিশ। সোমবার গভীর রাতে সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নের গ্রামের মাস্টারপাড়ায় ব্যবসায়িক কোন্দল নিয়ে এই ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জিএম সবুজ হাসান ও বর্তমান সভাপতি শাহিন হাসানের পক্ষের মধ্যে সমঝোতা বৈঠককালে এ হত্যাকান্ড ঘটে বলে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।
১০ ডিসেম্বর ২০১৯/ বিডিনিউজ২৪ 

ছাত্রদল নেতা অভি হত্যা মামলায় ৪ ছাত্রলীগ কর্মী গ্রেফতার
চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং থানা ছাত্রদল নেতা অভি হত্যা মামলায় ৪ ছাত্রলীগ কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকালে তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৩ জুলাই) ভোরে নগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতারকে করা হয়। গ্রেফতাররা হলেন- মো. শাহরিয়ার ফারদিন প্রকাশ তুহিন (১৯), মো. ইয়াছিন আরাফাত প্রকাশ টিটু (৩০), মো. ইরফান প্রকাশ বাবু (২৩) ও মো. ইব্রাহিম মুন্না (২৬)। পুলিশ জানায়, গ্রেফতার চারজন নিজেদের ছাত্রলীগ কর্মী বলে পরিচয় দেয়। 
৩ জুলাই ২০২০/ জাগো নিউজ 

ভাইকে খুন, বোনকে নিপীড়নের অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে
চট্টগ্রামের আকবর শাহ এলাকায় ছোট বোনকে কুপ্রস্তাবের প্রতিবাদ করায় বখাটের হামলায় খুন হয়েছেন বড় ভাই। এই হত্যার বিচার চেয়ে মামলা করায় উল্টো বাদির পরিবারকে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। এ হত্যা নিয়ে কতিপয় পুলিশ কর্তাদের অবহেলার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছে রেশমী আক্তার নামের এক তরুণী। সোমবার (৩১ আগস্ট) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওই তরুণী অভিযোগ করে বলেন, হত্যামামলা দায়েরের পর আকবরশাহ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল সিদ্দিক প্রকাশ মেন্টাল জুয়েল, একই এলাকার শহীদ প্রকাশ গুটি, মেম্বার শহীদসহ এলাকার বখাটেরা আমাকে বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি লোকমান আলী, সাধারণ স¤পাদক কাজী আলতাফসহ কতিপয় কিছু আওয়ামী লীগ 
নেতা অপরাধীদের পক্ষ নিয়ে আমাদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। 
২ সেপ্টেম্বর ২০২০/ চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রামে বন্ধুর হাতে বন্ধু খুন, দুজনই ছাত্রলীগের
ছাত্রলীগের স্থানীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে আনোয়ারা উপজেলা সদরের মা কমিউনিটি সেন্টারের সামনে কৌশলে ডেকে আনা হয় আশরাফকে। এ সময় সন্দেহভাজন নয়ন সরকার ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করেন আশরাফকে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে আনোয়ারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানোর পর সেখানেই মৃত্যু ঘটে আশরাফের।
২০ ফেব্র“য়ারী ২০২১/ চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বগুড়ায় প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু
বৃহ¯পতিবার ধুনট উপজেলায় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি সমাবেশকে কেন্দ্র করে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। সেখানে ছাত্রলীগের ডাকা বিক্ষোভ সমাবেশে  যাওয়ার পথে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম স¤পাদক তাকবীর ইসলামের মোটরসাইকেলে ধাক্কা লাগে জেলা ছাত্রলীগের সদস্য জাহিদ হাসানের মোটরসাইকেলের। এতে দুই নেতার মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা ও কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে ধুনট থেকে বগুড়া শহরের সাতমাথায় ফেরার পর সরকারি আজিজুল হক কলেজ ছাত্রলীগের নেতা আবদুর রউফ ও তাঁর সমর্থকদের সঙ্গে তাকবীর ইসলাম ও তাঁর সমর্থকদের  সংঘর্ষ বাধে। একপর্যায়ে তাকবীর ইসলাম খানকে ছুরিকাহত করা হয়।
১৬ মার্চ ২০২১/ প্রথম আলো

মুক্তিযোদ্ধাকে কুপিয়ে হত্যা করল 'ছাত্রলীগের' কিশোর গ্যাং
চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলায় মোহাম্মদ শাহজাহান (৬০) নামে আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধাকে কুপিয়ে খুন করেছে একই এলাকার ছাত্রলীগের কিশোর গ্যাংশুক্রবার সকালে উপজেলার ৫নং ওচমানপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ 
শাহজাহান ওচমানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ স¤পাদক ও বর্তমান সদস্য।
২৮ মে ২০২১/ ঢাকা নিউজ ৭১

সিলেটে রাহাত হত্যা: প্রধান আসামি ছাত্রলীগ কর্মী সাদি গ্রেফতার
বৃহ¯পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজের মূল ফটকের ভেতরে ছুরিকাঘাতে খুন হন পুরান তেতলি গ্রামের সুরমান মিয়ার ছেলে ও কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয়বর্ষের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র আরিফুল ইসলাম রাহাত। তাকে উপুর্যুপুরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় একই কলেজের বহিস্কৃত ছাত্র ও ছাত্রলীগের কর্মী সামসুদ্দোহা সাদি ও তার সহযোগীরা।
২৭ অক্টোবর ২০২১/ যুগান্তর