ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের প্রাচীনতম ও সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে দেশের ইতিহাস ও socio-political প্রেক্ষাপটে এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাঙ্গন কেবল জ্ঞানচর্চার কেন্দ্রই নয়, বরং এটি বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের সূতিকাগার হিসেবেও পরিচিত। কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয় শুরু থেকেই হিন্দুত্ববাদের আগ্রাসনের কবলে পড়েছে। পাশাপাশি বাম আদর্শের শিক্ষকদের দৌরাত্মে ঢাবি অনৈতিকতার তীর্থস্থানেও পরিণত হয়েছে। ইংরেজ আমলে এখানে মুশরিকদের আগ্রাসন বেশি পরিলক্ষিত হয়। এই হিন্দুত্ববাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় ১৯৪৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি মুসলিম লীগের ছাত্রনেতা শহীদ নজির আহমদকে নির্মমভাবে খুন করে হিন্দু ছাত্ররা। নাজির আহমদকে স্মরণ করে কবি জসিম উদ্দিন লিখেন
নজীরের বাপ ফিরিয়া যাইবে আবার আপন ঘরে
নজীরের সেই শূন্য বিছানা বাক্স সঙ্গে ক'রে।
অর্দ্ধেক পড়া বইগুলি তার লেখা ও অলেখা খাতা,
পাতায় পাতায় স্মৃতি তার কত আখরের মত পাতা।
পাকিস্তান আমলে মুশরিকদের দৌরাত্ম কিছুটা কমলেও শুরু হয় বাম-নাস্তিকদের দৌরাত্ম। একইসাথে শুরু হয় শেখ মুজিবের নেতৃত্ব গড়ে ওঠা ছাত্রলীগের সন্ত্রাস। তারা এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্যায়ের আখড়া বানিয়ে দেয়। বিশেষত মাদকের সয়লাব ঘটায়। ১৯৬৯ সালের ১২ আগস্ট বামপন্থী সন্ত্রাসীরা ছাত্রসঙ্ঘের ছাত্রনেতা শহীদ আব্দুল মালেককে হত্যা করে।
এরপর দেশ তথাকথিত স্বাধীন হলো। স্বাধীনতার পর ঢাবিতে একচ্ছত্র আধিপত্য তৈরি হয় ছাত্রলীগ ও তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হুয়া জাসদ ছাত্রলীগ। ১৯৭২ থেকে এখন পর্যন্ত ৭৬ জন মানুষ খুন হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু বিচার হয়নি কোনো ঘটনারই। এর মধ্যে সবচেয়ে লোমহর্ষক ঘটনা হলো ১৯৭৪ সালের ৪ এপ্রিল ভোরে মহসিন হলে আভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে ছাত্রলীগ সেক্রেটারি শফিউল আলম প্রধান একে একে সাত ছাত্রলীগ কর্মীকে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে। এতে শফিউল আলম প্রধানের মৃত্যুদণ্ড ঘোষিত হয়। কিন্তু জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এলে সে মৃত্যুদণ্ড থেকে মুক্তি পায়।
স্বাধীনতার পর আর ঢাবি স্থিতিশীল ছিল না। রাজনৈতিক আধিপত্য নিয়ে সংঘর্ষ ছিল নিয়মিত ঘটনা। এছাড়া খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজি, শিক্ষকদের হেনস্তা, এমনকি দেহব্যবসার মতো ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটতে থাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। আশির দশকে ঢাবি জাহান্নামে পরিণত হয়। কবি আল মাহমুদ তাই তাঁর কবিতায় বলেন,
এই মহানগরীর ভদ্রবেশী বেশ্যা, লম্পট, হিরোইনসেবী ও ছিনতাইকারীর
প্রাত্যহিক পাপের দেনায় 'আমরা এমনিতেই অতিষ্ঠ,
এর সাথে যোগ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মহান পণ্ডিতেরা।
শিক্ষার প্রতিটি প্রাঙ্গণ কিশোর হত্যার মহাপাপে এখন রক্তাক্ত, পঙ্কিল।
প্রকৃত পাপীদের বিনাশ ত্বরান্বিত করতে তুমি কি বাংলাদেশের
প্রতিটি বিদ্যাপীঠকেই বিরাণ করে ফেলবে?
একমাত্র শহুরে পড়ুয়া মেয়েটির গলার চেন ও হাতের বালা
জগন্নাথ হলের পাশের রাস্তা থেকে ছিনতাই হলো। বুকের ওপর ছুরি রেখে
খুলে দে হারামজাদী, চুপ্।
আমরা তো চুপ করেই আছি, তবু হে পরোয়ারদিগার
জানতে সাধ জাগে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কি ডাকাতদের গ্রাম?
প্রভু
ডাকাত, ছিনতাইকারী, পন্ডিত ও বেশ্যাদের হাত থেকে
তুমি কি ইলমকে রক্ষা করবে না? -রাব্বি যিদনী ইলমা-
প্রভু, আমাদের জ্ঞানদান করো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের একক দৌরাত্মে গত এক যুগ ঢাবি ভয়ংকর হয়ে ওঠে। এখানে যোগ্য নাগরিক তৈরির বদলে পাকা সন্ত্রাসী হয়ে ওঠার প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। দৈনিক প্রথম আলো, যুগান্তর ও সাপ্তাহিক সোনার বাংলার রিপোর্ট ও কেস স্টাডিতে দেখা যায় গত ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ একাই খুন করেছে অন্তত ২৫৩ জনকে। এর মধ্যে একটা বড় অংশ নিজ দলের নেতাকর্মী।
প্রতি বছরেই তারা খুন করেছে প্রায় ১৮ জনকে। প্রকাশ্যে বিশ্বজিৎ হত্যাকান্ড, ঢাবির মেধাবী ছাত্র আবু বকর হত্যাকান্ডে দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। তাছাড়া ২০১০ সালে বরিশাল পলিটেকনিকে দু’পক্ষের সংঘর্ষের সময় নজরুল ইসলামকে ধরে রেখে চুরি দিয়ে মুহুর্মুহু কোপানির দৃশ্য মানুষের মনে বীভৎসতার নতুন চিত্র তুলে ধরে। তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি শিশু ও সাংবাদিকও। ছাত্রলীগ নেতা তপুর নির্দেশে এসপি ফজলুল করিমকে হত্যা করা হয়। সারাদেশে ছাত্রলীগের এই হত্যা ও খুনের রাজনীতি আবর্তিত হয় ঢাবি ছাত্রলীগের মাধ্যমে।
বিষফোঁড়া সোহরাওয়ার্দি
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান দীর্ঘদিন ধরেই সাধারণ জনতার নিরাপদ বিনোদনকেন্দ্র হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটি অপরাধীদের আনাগোনা ও মাদকসেবীদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে। পার্কের নির্জন কোণে গাঁজা, ইয়াবা, ফেনসিডিলসহ নানা মাদকদ্রব্য বিক্রি ও সেবন হয়ে আসছে। রাতে উদ্যানের বিভিন্ন বিনোদনাঞ্চল যেমন মুক্তমঞ্চ, কালী মন্দির এলাকা, চারুকলার গেট সংলগ্ন স্থান ইত্যাদিতে প্রকাশ্যে মাদক কেনাবেচা হয়। তবে শুধু মাদকই নয়, সন্ধ্যার পর উদ্যানটিতে ছিনতাই, ব্ল্যাকমেইল ও চাঁদাবাজিসহ নানা অসামাজিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পায়। মাদকচক্রের কিছু সদস্য তরুণ-তরুণী ও হিজড়া নিয়ে গোষ্ঠী গঠন করে সাধারন দর্শনার্থীদের ভয় দেখিয়ে মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেয়।
সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ড
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অপরাধের মধ্যে সবচেয়ে শীর্ষে রয়েছে খুন ও সহিংস ঘটনা। ১৩ মে ২০২৫ তারিখ রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন। এর আগে ২০২২ সালের ১৮ জুলাই উদ্যানের পাটিতে ৩০ বছর বয়সী বিল্লাল হোসেনকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। ২০২১ সালের ১ জুন উদ্যানের ভিতরে মারধরের পর হাসপাতালে নেওয়ার পর আবুল হাসানের মৃত্যু হয়েছে; এ ঘটনায় তখন মাস্টার দা সূর্যসেন হলে ছাত্রলীগের এক নেতা জড়িত ছিলেন বলে খোঁজ পাওয়া যায়। মানবজমিনের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৩০ জনের লাশ উদ্যান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
মাদকের ‘আস্তানা’
সোহরাওয়ার্দি উদ্যান মাদকের আস্তানা হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। মাঠের নির্জন কোণগুলোতে ফেনসিডিল, ইয়াবা, গাঁজা এমনকি ইনজেকশন-ভিত্তিক নেশাজাত দ্রব্য সহজলভ্য হয়ে উঠেছে। যুগান্তর পত্রিকার রিপোর্ট থেকে জানা যায়, উদ্যানের মাদক সিন্ডিকেটে অন্তত ১০ জনের নেতৃত্বে ৬০–৭০ জন সক্রিয় রয়েছে। পুলিশের একটি চক্রের সদস্য জানান, এর আগে উদ্যানের মাদক ব্যবসা ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রণ করত; ক্ষমতার পরিবর্তনের পর নতুন চাঁদাবাজরা নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করেছে। মুক্তমঞ্চ সংলগ্ন এলাকায় প্রতিদিন রাতে গাঞ্জা সেশন বসে; নগদ বাজারমূল্য অনুযায়ী ‘এক পুরিয়া’ গাঁজার দাম প্রায় ১০০ টাকা। এখানকার রিকশাচালকরা বলছেন, প্রতিদিন বিভিন্ন পেশার লোকজন (শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, রাজনীতিক) মাদক কেনার উদ্দেশ্যে উদ্যানে আসে।
এখানে গাঁজা, ইয়াবা, ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্যের অবাধ বেচাকেনা চলে । উদ্যানের মুক্তমঞ্চ (শিল্পকলা একাডেমির নির্মিত উন্মুক্ত নাট্যমঞ্চ) বিশেষভাবে গাঁজার আসর হিসেবে পরিচিত, যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ মাদক সেবন করতে আসে । শুধু মুক্তমঞ্চ নয়, পুরো উদ্যান জুড়েই মাদক সেবনের দৃশ্য দেখা যায় ।
মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে নারী মাদক বিক্রেতারাও উল্লেখযোগ্য, যাদের মধ্যে পারুল নামের একজন বিশেষভাবে পরিচিত। সে বিভিন্ন ছদ্মবেশে ঘুরে ঘুরে ৫০ থেকে ১০০ টাকায় গাঁজা বিক্রি করে এবং প্রায়শই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেও অল্প সময়ের মধ্যেই ছাড়া পেয়ে যায় । মাদক ব্যবসার কারণে উদ্যানে বিভিন্ন সময়ে অঘটন ঘটেছে, এমনকি খুনের ঘটনাও ঘটেছে । মাদক নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে মাদক ব্যবসায়ী ও তাদের সহযোগীদের সংঘর্ষের ঘটনা প্রায় নৈমিত্তিক ঘটনা।
অসামাজিক কার্যকলাপ
মাদক ব্যবসার পাশাপাশি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছিনতাই, মারামারি এবং অন্যান্য অসামাজিক কার্যকলাপও দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে । সন্ধ্যার পর থেকেই অপরাধীরা এখানে ভিড় করে এবং রাত গভীর হওয়ার সাথে সাথে তাদের আড্ডা আরও জমে ওঠে । উদ্যানের অন্ধকারাচ্ছন্ন স্থানগুলি অপরাধীদের জন্য নিরাপদ মনে করা হয়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যৌন অপরাধ ও অসামাজিক কার্যকলাপের ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। মন্দিরের পাশ, গ্লাস টাওয়ার ও চারুকলার গেট এলাকায় সন্ধ্যার পর তরুণ-তরুণী ও হিজড়াচক্রের দৌরাত্ম্য বেড়ে গেছে। এসব স্থানে চলে অসামাজিক কার্যকলাপ। উদ্যানের ভেতরে কয়েকটি স্পটে দেহ ব্যবসাও চলে। মূলত উদ্যানের ভেতর কয়েকটি স্পট রয়েছে- মুক্তমঞ্চ, ফুড কিওস্ক ক্যান্টিন, স্মৃতিস্তম্ভ, ছবিরহাট, রমনার পুকুর পাড়, শিখা চিরন্তনের পেছনে, হাইকোর্টের গেট, মাঠ। এই প্রতিটি স্পটেই দিনে রাতে মাদকসেবীদের আড্ডা বসে।
প্রশাসনের ব্যর্থতা ও অপরাধীদের সাথে আঁতাত
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অপরাধের ব্যাপক বিস্তারের পেছনে প্রশাসনের ব্যর্থতা ও অপরাধীদের সাথে আঁতাত একটি বড় কারণ। প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি হলেও পুলিশ না দেখার ভান করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, উদ্যানের অপরাধচক্রে জড়িত রয়েছে কতিপয় শিক্ষার্থীও। ২০২৫ সালের আগস্টের পর নতুন চাঁদাবাজরা উদ্যান নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তাদের চাঁদা দিয়েই ব্যবসা চলছে। স্থানীয়দের মতে, আনসার সদস্যরাই এইসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। তাদেরকে বখরা দিয়ে রমনার গেট দিয়ে ঠিকই সকলে মাঠের মধ্যে ঢোকে।
ঢাবি ডাকাতের গ্রাম হওয়ার সাথে সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের কানেকশন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সোহরাওয়ার্দি কেন্দ্রীক অপরাধীরা মূলত তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে ঢাবি'র ছাত্রনেতাদের শেল্টারে। এতোদিন ছাত্রলীগ এই ব্যাপারগুলো নিয়ন্ত্রণ করতো। ৫ আগস্ট বিপ্লবের পর নতুন ছাত্রনেতারা এই বিষয়গুলোর সাথে যুক্ত হয়েছে। তবে এটা এখনো সেটেলড নয়। তাই নিয়মিতই নারী, মাদক, ফুটপাতের দোকানগুলো থেকে চাঁদা কালেকশন নিয়ে মারামারি হচ্ছে। সম্প্রতি গভীর রাতে ছাত্রদল নেতা সাম্য মাদকসেবীদের দ্বারা নিহত হলে নড়ে বসে প্রশাসন।
যদিও ঢাবি প্রশাসন আগেই উদ্যানের অপরাধমূলক বিষয়গুলো থেকে ঢাবিকে রক্ষা করার উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু বামপন্থী ছাত্র শিক্ষক ও ছাত্রদলের একাংশ এই প্রক্রিয়ায় বিশেষভাবে বহিরাগতদের গভীর রাতে আড্ডা বন্ধ করার ব্যাপারে ঢাবি প্রশাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়। ডাকাতের গ্রাম থেকে সভ্য হয়ে ওঠার জন্য ঢাবি প্রশাসনকে অবশ্যই উদ্যোগ নিতে হবে। তবে জুলাই বিপ্লবের পর কিছু অগ্রগতি হয়েছে। যেমন, আদু ভাইদের বিশ্ববিদ্যালয় হল ত্যাগ, রাজনৈতিক সিট বন্ধ, গেস্ট রুম কালচার বন্ধ, গণরুম বন্ধ ইত্যাদি উদ্যোগ ভালো ভূমিকা রাখছে।
সাম্য হত্যাকাণ্ডের পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অবস্থা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। এই হত্যাকাণ্ডের পর উদ্যানকে 'আতঙ্কের স্থান' থেকে ধীরে ধীরে নিরাপদ ও 'স্বস্তিদায়ক স্থানে' রূপান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ।
সরকার সাতটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে :
১. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে থাকা অবৈধ দোকান উচ্ছেদ
২. মাদক কারবারি বন্ধ এবং পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে যৌথ অভিযান চালানো
৩. উদ্যানে পর্যাপ্ত আলো ও সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং সেগুলোর নিয়মিত মনিটরিং করা
৪. উদ্যানে একটি ডেডিকেটেড পুলিশ বক্স স্থাপন করা
৫. রাত ৮টার পর উদ্যানে জনসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা
৬. নিয়মিত মনিটরিং ও অভিযানের জন্য সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি কমিটি গঠন
৭. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রমনা পার্কের মতো সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা চালু করা
যদিও সাম্প্রতিক সময়ে সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, কিন্তু এর স্থায়ী সমাধানের জন্য আরও কঠোর ও টেকসই পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। একটি ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মর্যাদা ফিরিয়ে আনতে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। আমরা আশা করি অল্প সময়ের মধ্যে ঢাবি হলগুলো যেভাবে সন্ত্রাসমুক্ত হয়েছে, পুরো ঢাবি এলাকা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও মাদকমুক্ত হওয়ার মাধ্যমে ঢাবি কবি আল মাহমুদের 'ডাকাতের গ্রাম' তকমা থেকে মুক্তি পাবে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন