৪ ডিসে, ২০২২

খিলাফত পর্ব-৩৭ : উসমান রা.-এর ইউরোপ অভিযান


রাসূলুল্লাহ সা. ও প্রথম দুই খলিফার আমলে ইসলামী খিলাফাতের কোন নৌবাহিনী ছিল না। উসমান রা.-এর আমলে খিলাফতের উত্তর পশ্চিমমুখী অর্থাৎ ইউরোপের দিকে সম্প্রসারণের স্বার্থে নৌবাহিনী গঠনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে অভিজ্ঞদের সাথে পরামর্শক্রমে খালীফা নৌবাহিনী গঠনের অনুমতি দেন। নবগঠিত বাহিনী যুদ্ধে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করে। খিলাফাতের ইতিহাসে সর্বপ্রথম নৌবাহিনী গঠনের কৃতিত্ব মু'আবিয়া রা.-এর এবং সাইপ্রাস অভিযানে প্রথমবারের মত মুসলিমরা নৌবাহিনী ব্যবহার
করে।

এর আগে দ্বিতীয় খালীফা ‘উমার রা.-এর আমলে মু'আবিয়া রা. সিরিয়ার শাসনকর্তা ছিলেন। সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল রোমান সাম্রাজ্যের সীমান্তবর্তী ছিল। তিনি প্রায়ই রোমানদের আক্রমণের শঙ্কায় থাকতেন। তিনি উমার রা.-কে লিখেন, 'আলেপ্পোর কোন কোন গ্রাম হতে রোমানদের কুকুরের চিৎকার ও মোরগের বাক শোনা যায়। অতএব নৌযুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার অনুমতি দিন।

এই বিষয়ে উমার রা. তথ্যানুসন্ধান করলেন। মিসরের শাসক আমর ইবনুল আস রা.-কে তিনি লিখলেন, সমুদ্র ও সমুদ্রারোহী সম্পর্কে আমাকে জানান। আমার মন ওদিকে ঝুঁকছে। জবাবে আমর রা. লিখলেন, 'সাগর একটি মহাসৃষ্টি, খুব কম মানুষই এতে আরোহণ করে, সাগরের নিচে পানি আর ওপরে আকাশ, এছাড়া আর কিছুই নেই। সাগর যখন স্থির থাকে তখন হৃদয় বিদীর্ণ করে, আর যখন প্রকম্পিত হয় তখন বুদ্ধি বেঁকে যায়, সাগরে ইয়াকীন কমে যায় আর সন্দেহ বেড়ে যায়, সাগরারোহীরা নৌকার ওপর কীটের ন্যায়; হেলে পড়লে ডুবে যায় আর মুক্তি পেলে পেরেশান ও হয়রান হয়ে পড়ে।'

আমর রা. হতে সমুদ্র সম্পর্কে অবহিত হয়ে উমার রা. মু'আবিয়া রা.-কে লিখলেন, 'না, তোমাকে সমুদ্রাভিযানের অনুমতি দেওয়া হলো না। আমি এখনই কোন মুসলিমকে সাগরে অভিযানে পাঠাব না। আল্লাহর শপথ, রোমের সমস্ত সম্পদের চাইতে একজন মুসলিম আমার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

রোমান সাম্রাজ্যের সৌন্দর্য ও ঐশ্বর্য সম্পর্কে মু'আবিয়া রা. জানতেন। তাই তিনি তাঁর পরিকল্পনা হতে রোমান সাম্রাজ্যে অভিযানের বিষয়টি বাদ দিতে পারলেন না। উসমান রা. খলীফা নির্বাচিত হলে মু'আবিয়া রা. আবারো সমুদ্রাভিযানের অনুমতি চাইলেন। এ বিষয়ে উমার রা.-এর সিদ্ধান্ত উসমান রা.-এর জানা ছিল। তাই তিনি প্রথমবার অনুমতি দেননি।

কিন্তু মু'আবিয়া রা.-এর বারংবার অনুরোধে উসমান রা. শর্তসাপেক্ষে রাজি হন। একটি শক্তিশালী নৌ-বাহিনী গঠনের উদ্যোগ নেন। মুসলিমদের জন্য সম্পূর্ণ নতুন এ অভিযানের জন্য মু'আবিয়া রা. সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। কিছু নৌযান প্রয়োজনীয় অস্ত্রশস্ত্র ও রসদসহ প্রস্তুত করা হয়। অভিযান শুরু করার জন্য আকা বন্দর বাছাই করা হয়। সামুদ্রিক জিহাদে অংশগ্রহণের জন্য নৌবাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন। মু'আবিয়া রা.-এর সাথে তাঁর স্ত্রী ফাখিতা বিনতু কারাযা অভিযানে অংশগ্রহণ করেন আর বিশিষ্ট সাহাবী উবাদাহ ইবনু সামিত রা.-এর সাথে তাঁর স্ত্রী উম্মু হারাম বিনতু মিলহান রা. এ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মুআবিয়া রা.-এর জন্য স্ত্রী সাথে নিয়ে যাওয়া খলিফার দেওয়া শর্ত ছিল। যাতে মুআবিয়া রা. যুদ্ধে মুসলিমদের নিরাপত্তার ব্যাপারে কনসার্ন থাকেন।

রাসূলুল্লাহ সা.-এর দু'আ কবুল হওয়ার একটি নজির হল উবাদাহ রা.-এর স্ত্রী উম্মু হারাম বিনতু মিলহানের সাইপ্রাস যুদ্ধে অংশগ্রহণ ও শাহাদাতবরণ। আনাস রা.-এর খালা ও 'উবাদা ইবনু সামিত রা.-এর পত্নি উম্মু হারামের বাসায় রাসূলুল্লাহ সা. মাঝেমধ্যে যেতেন এবং পানাহার করতেন। একদিন রাসূলুল্লাহ সা. তাঁর বাসায় গিয়ে পানাহার করেন ও ঘুমিয়ে পড়লেন।

ঘুম থেকে জেগে তিনি হেসে ওঠলেন। উপস্থিতরা জিজ্ঞাসা করলো আপনি কেন হাসলেন? তিনি বললেন, 'স্বপ্নে আমি আমার উম্মাতের একদল যোদ্ধাকে দেখলাম, সিংহাসনে উপবিষ্ট রাজার ন্যায় তারা সাগর পাড়ি দিচ্ছে। উম্মু হারাম রা. বললেন, 'আপনি দু'আ করুন, আমিও যেন সেই দলের অন্তর্ভুক্ত হই। রাসূলুল্লাহ সা. তাঁর জন্য দু'আ করে আবার ঘুমিয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর ঘুম থেকে জেগে আবার হেসে ওঠলেন। উম্মু হারাম রা. জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি কেন হাসলেন?' রাসূলুল্লাহ সা. বললেন, 'স্বপ্নে আমি আমার উম্মাতের একদল যোদ্ধাকে দেখলাম, সিংহাসনে উপবিষ্ট রাজার ন্যায় তারা সাগর পাড়ি দিচ্ছে আর সেই বাহিনীতে তুমিও আছো।

২৮ হিজরীতে কিছু নৌযান নিয়ে মুসলিম বাহিনী 'আকা বন্দর হতে সাইপ্রাসের উদ্দেশে রওয়ানা করলেন। রোমান দ্বীপটিতে পৌঁছার পর বাহিনীর সদস্যদের সাথে উম্মু হারাম রা.-ও তীরে অবতরণ করলেন। তিনি যখন বাহনে আরোহণ করতে গেলেন তখন তিনি পড়ে গেলেন এবং তাঁর ঘাড় ভেঙ্গে গেল। ঘটনাস্থলেই তিনি প্রাণ হারালেন। ঐ দ্বীপে উম্মু হারাম রা.-এর কবরটি দ্বীন প্রচারে মুসলিমদের ত্যাগের স্মারক হিসেবে আজো বিদ্যমান। পরবর্তীতে ঐ স্থানটি নেককার রমণীর কবর হিসেবে পরিচিত হয়।

এ অভিযানে বেশ কয়েকজন সাহাবী অংশগ্রহণ করেন। সেনাপতি ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে পরামর্শক্রমে মু'আবিয়া রা. সরাসরি আক্রমণ না করার সিদ্ধান্ত নিলেন। তিনি দূত মারফত সাইপ্রাসবাসীদের জানালেন:
(১) আমরা এখানে যুদ্ধ করতে আসিনি।
(২) আমরা এসেছি আল্লাহর মনোনীত দ্বীন ইসলামের সুমহান আদর্শের দিকে আহ্বান জানানোর জন্য।
(৩) ইসলামী সাম্রাজ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ সিরিয়ার সীমান্তের নিরাপত্তার জন্যও এ অভিযান পরিচালনার প্রয়োজন হয়েছে। কারণ রোমানরা সাইপ্রাসকে ঘাঁটি বানিয়ে সিরিয়া সীমান্তে অব্যাহতভাবে হামলা চালাচ্ছে। এসব অভিযানের জন্য তারা সাইপ্রাস থেকে সৈন্যও সংগ্রহ করে। তোমরা আত্মসমর্পণ করলে আমরা কোন অভিযান পরিচালনা করব না।'

মুসলিমদের এই আহ্বানে সাইপ্রাসবাসী সাড়া দিল না। তারা রোমান সহায়তার প্রতীক্ষায় ছিল, তাদের ধারণা ছিল রোমানরা তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসবে এবং মুসলিমদেরকে দ্বীপ থেকে বিতাড়িত করবে। সাইপ্রাসবাসীর কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া না আসায় মুসলিম বাহিনী দ্বীপটির রাজধানী অবরোধ করল। কয়েক ঘন্টার মধ্যেই দ্বীপবাসী আত্মসমর্পণ করে সন্ধির প্রস্তাব দিল। মুসলিম বাহিনী সন্ধি প্রস্তাব মেনে নিল। সাইপ্রাসবাসীর শর্ত ছিল তাদেরকে যেন রোমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সম্পৃক্ত না করা হয়; কারণ রোমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সামর্থ তাদের ছিল না। মুসলিম বাহিনী এই শর্ত মেনে নেয়। মুসলিমদের শর্তগুলোও দ্বীপবাসী মেনে নেয়।

তাদেরকে যে শর্তগুলো দেওয়া হয়
১. দ্বীপবাসী অস্ত্রধারণ করলে মুসলিমরা তাদেরকে নিরাপত্তা দেবে না;
২. রোমানদের তৎপরতা সম্পর্কে মুসলিমদেরকে অবহিত করতে হবে;
৩. ফি বছর দ্বীপবাসী ৭০০০ দিনার মুসলিমদেরকে প্রদান করবে;
৪. শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় মুসলিম বাহিনীকে সাইপ্রাসের ভূমি বিনা দ্বিধায় ব্যবহার করতে দিতে হবে;
৫. রোমানরা মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলে দ্বীপবাসী তাদেরকে সাহায্য করতে পারবে না এবং
৬. মুসলিম বাহিনী সম্পর্কিত কোন তথ্যও সরবরাহ করতে পারবে না।

সন্ধিচুক্তির পর মুসলিম বাহিনী সিরিয়ায় ফিরে গেল। খিলাফাহ-এর ইতিহাসে প্রথম সমুদ্রাভিযান ও নৌযুদ্ধে মুসলিম বাহিনী সফলতা লাভ করল। এ অভিযান মুসলিমদের সাফল্য ও সক্ষমতার স্মারক হয়ে রইল। পরবর্তী প্রতিটি সমুদ্রাভিযান ও নৌযুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর সাফল্যের অনুপ্রেরণা হিসেবে এই অভিযান ভূমিকা পালন করেছে।

চুক্তি পালনের শর্তে সাইপ্রাসবাসীদেরকে স্বশাসনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। মু'আবিয়া (রা.) সেখানে কোন শাসনকর্তা নিয়োগ করেননি। ওদিকে মুসলিমরা চলে আসার পর রোমানরা সাইপ্রাস দ্বীপবাসীকে ইসলামী খিলাফাতের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণের জন্য উস্কানি দিতে লাগল। ৩২ হিজরীতে সাইপ্রাসবাসী চুক্তি শর্ত ভঙ্গ করে রোমান বাহিনীকে নৌযান সরবরাহ করে সহায়তা করল। তাদের এহেন আচরণে মু'আবিয়া রা. খুবই ক্ষুব্ধ হলেন। এবার তিনি সাঁড়াশি আক্রমণ চালালেন; একদিকে মু'আবিয়া (রা.) ও অন্যদিকে আবদুল্লাহ ইবনু সা'দ-এর নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়। বিপুল সংখ্যক দ্বীপবাসী নিহত হল, অনেকে বন্দী হল। সাইপ্রাসের শাসনকর্তা আত্মসমর্পণ করে সন্ধি প্রার্থনা করলেন। পূর্ববর্তী চুক্তির শর্তের ভিত্তিতে মু'আবিয়া রা. প্রস্তাব মেনে নিলেন। তবে এবার তিনি সতকর্তামূলক কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন:
(১) সাইপ্রাসে ১২০০০ সদস্যের একটি বাহিনী মোতায়েন করলেন, এ বাহিনীতে বা আলবাক্ক হতে অনেক সৈনিক যোগদান করেছিল।
(২) একটি নতুন শহর ও মসজিদ স্থাপন করলেন।

মুসলিম বাহিনী অনুভব করল, সাইপ্রাসের বাসিন্দারা শান্তিপ্রিয় জনগোষ্ঠী, তাদের সামরিক সামর্থ্যও সীমিত। তবে রোমানরা জোর করে তাদেরকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে। মুসলিম বাহিনী তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করল এবং রোমানদের আক্রমণ ও অত্যাচার হতে তাদেরকে রক্ষা করলো।

হাবীব ইবনু মাসলামা আল-ফিহরী ছিলেন সিরিয়ার মুসলিম বাহিনীর সেনাপতি। উসমান রা.-এর খিলাফাতকালে তাঁর সেনাপতিত্বে সিরিয়া সীমান্তে অনেকগুলো সফল অভিযান পরিচালিত হয়।

কুফা ও সিরিয়া বাহিনীর যৌথ প্রতিরোধে রোমান আগ্রাসন প্রতিহত:
২৪ হিজরীতে রোমানরা সিরিয়া সীমান্তে মুসলিম এলাকায় অভিযান পরিচালনার জন্য এগিয়ে আসে। মু'আবিয়া রা. সেনাপতি হাবীব ইবনু মাসলামা আল-ফিহরীর নেতৃত্বে সিরিয়ার বাহিনীকে রোমানদের প্রতিরোধে প্রেরণ করেন। কিন্তু তাঁর কাছে মুসলিম সৈন্য সংখ্যা অপ্রতুল মনে হওয়ায় তিনি খালীফার কাছে অতিরিক্ত ফৌজ চেয়ে পত্র লিখেন। খালীফা কূফার গভর্নর আল-ওয়ালীদকে সিরিয়া বাহিনীর সহায়তায় দ্রুত সৈন্য প্রেরণের নির্দেশ দেন। আল-ওয়ালীদ আট হাজার সৈনিকসহ কুফার একটি দল সেনাপতি সালমানের নেতৃত্বে সিরিয়দের সহায়তার জন্য প্রেরণ করেন। হাবীব ও সালমানের নেতৃত্বাধীন সিরিয়া ও কুফার মুসলিম বাহিনী শত্রুদের পর্যুদস্ত করে রোমান ভূমিতে আক্রমণ হানে। যৌথ বাহিনী বিপুল বিজয় অর্জন করে; অভিযানে বহু দুর্গ বিজিত হয়, মুসলিম বাহিনী প্রচুর যুদ্ধলব্ধ সম্পদসহ প্রত্যাবর্তন করে।

২৫ হিজরীতে খালীফা উসমান রা. সিরিয়ার গভর্ণর মু'আবিয়া রা.-কে নির্দেশ দেন তিনি যেন সেনাপতি হাবীব ইবনু মাসলামাকে আর্মেনিয়া অভিযানে প্রেরণ করেন। নির্দেশ মুতাবিক হাবীবকে আর্মেনিয়া অভিযানে প্রেরণ করা হয়। সেনাপতি হাবীব সর্বপ্রথমে ইউরোপের কালীকালা অবরোধ করেন, কিছুদিন পর স্থানীয়রা দেশত্যাগ ও জিজিয়ার বিনিময়ে নিরাপত্তা কামনা করে। তাদের আবেদন মেনে নেওয়া হয় এবং চুক্তি মুতাবিক অনেককে রোমান এলাকায় বহিষ্কার করা হয়। কালীকালায় কয়েক মাস অবস্থান করে হাবীব প্রত্যাবর্তন করেন।

সিরিয়া সীমান্তের একটি রোমান প্রদেশের নাম ছিল আর্মিনাকুস (বর্তমানে তুরস্ক)। এই প্রদেশের আওতায় অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ছিল, যেমন মালাতইয়া, সীওয়াস, কূনিয়া ইত্যাদি। এই প্রদেশের খৃস্টান প্রধানের নাম ছিল মাওরিয়ান। কালীকালা বিজয়ের পর মুসলিম সেনাপতি হাবীব ইবনু মাসলামা আল-ফিহরী শুনতে পেলেন যে, মাওরিয়ান ৮০,০০০ সৈন্যের এক রোমান বাহিনী সিরিয়া সীমান্তে প্রেরণ করছেন। সংবাদ পেয়ে হাবীব অতিরিক্ত ফৌজ চেয়ে মু'আবিয়ার কাছে পত্র লেখেন। মু'আবিয়া রা. খালীফার কাছে সাহায্যের আবেদন করলে তিনি কুফা হতে ছয় হাজার সৈন্যসহ সালমান ইবনু রাবী'আহ আল-বাহিলীকে প্রেরণ করেন। এবারও যৌথবাহিনী রোমানদের পর্যদুস্থ করেন। উসমান রা.-এর শাসনামলে তুরস্ক, আর্মেনিয়া, জর্জিয়া ও আজারবাইজানের বিস্তীর্ণ এলাকা মুসলিমদের দখলে আসে।

রোমানদের বিরুদ্ধে অভিযানে সাফল্য মুআবিয়া রা.-কে ভালো কনফিডেন্স এনে দেয়। তিনি ৩২ হিজরীর কনস্ট্যান্টিনোপল (বর্তমানে ইস্তাম্বুল) প্রণালীতে অভিযান চালান। এটি রোমানদের অন্তরে ভয় তৈরি করে। তবে তিনি রোমানদের রাজধানী কনস্ট্যান্টিনোপল দখল করতে পারেন নি। সেরকম ইচ্ছাও সেসময় তাঁর ছিল না। তবে রোমানদের আগ্রাসী ভূমিকা অনেকটাই তিনি থামিয়ে দিতে পেরেছেন। এছাড়াও মুয়াবিয়া রা. তাঁর সেনা ও নৌ-বাহিনী দিয়ে প্রতিবছর গ্রীষ্মকালে রোমান সীমান্তে মহড়ার আয়োজন করতেন।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন